Thank you for trying Sticky AMP!!

শতবর্ষী হাটে জমে থাকে হাঁটুপানি

নদীভাঙনে হাটের একাংশ বিলীন হয়ে গেছে। মাছ ও সবজিবাজারে জমে আছে বৃষ্টির কাদাপানি।

ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই মানিকগঞ্জের বৃহত্তম ব্যবসাকেন্দ্র ঘিওর হাটের রাস্তাগুলোতে পানি জমে যায়

হাটটি শতাধিক বছরের পুরোনো। কোটি টাকার বেশি কেনাবেচা হয় হাটের দিন। এ ছাড়া প্রতিদিন বসে নিত্যপণ্যের বাজার। মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাটে পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এখানে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। এসব কারণে এ হাটের ক্রেতা ও বিক্রেতারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

হাটের কয়েকজন ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ধানহাট, কাঠপট্টি, দুধবাজার, মাছবাজার, সবজিবাজার, চালবাজারসহ আরও কয়েকটি স্থানে সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি জমে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়।

এতে ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। ময়লা-আবর্জনায় জমে থাকে চারপাশে। লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হলেও ন্যূনতম সুবিধা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এটি জেলার সবচেয়ে বড় হাট। ধলেশ্বরী ও ইছামতী নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠে এটি। ব্রিটিশ আমলে হাটের পাশেই ছিল কুস্তা নদীবন্দর। সে সময় স্টিমারে করে পাট, ধান, চাল, শর্ষেসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য দূরদূরান্ত থেকে এই হাটে আনা-নেওয়া হতো।

সপ্তাহের প্রতি বুধবার এখানে হাট বসে। এ ছাড়া প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বসে বাজার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পোশাকের দোকানসহ বিভিন্ন মুদি–মালামালের দোকানে কেনাবেচা চলে। সারা দেশে এই হাটের পরিচিতি রয়েছে। এখনো হাটের দিন কোটি টাকার ওপরে পাট বিক্রি হয়। এসব পাট দেশের বিভিন্ন পাটকলে সরবরাহ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। তবে এই হাটে নেই উন্নয়নের ছোঁয়া।

গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, হাটের ভেতরে রাস্তার পিচঢালাই উঠে গিয়ে খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে পানি জমে থাকায় রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে আছে। রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটিতে নেই কোনো বাতি। এ ছাড়া সম্প্রতি নদীভাঙনে হাটের একাংশ বিলীন হয়ে গেছে। মাছ ও সবজিবাজারে জমে আছে বৃষ্টির কাদাপানি। একমাত্র শৌচাগারও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব সমস্যা সত্ত্বেও বিপুলসংখ্যক ক্রেতা ও বিক্রেতায় মুখর থাকে পুরো হাট। কাদাপানি মাড়িয়ে ক্রেতা–বিক্রেতারা কেনাবেচা করেন।

নানা সমস্যার কারণে হাটটিতে দিন দিন মানুষ কমে যাচ্ছে বলে জানান সবজি ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, এখনো বাজারে পানি জমে আছে। কাঁদাপানি মাড়িয়ে ক্রেতারা আসতে চান না। বেচাকেনাও কমে গেছে।

এ হাট ইজারা দেয় উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, বৃহত্তর এই হাটের সমস্যার বিষয় জানার পর তিনি একাধিকবার সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।

এসব সমস্যা নিরসনে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। নদীভাঙন থেকে হাট রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ ও আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই প্রকল্পের অর্থ বরাদ্ধ পাওয়া যাবে।