Thank you for trying Sticky AMP!!

দৌলতদিয়া ঘাটে যানজট নেই, ফিরতি যাত্রায় স্বস্তি

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট হয়ে কর্মস্থলে ফিরছেন হাজারও মানুষ, তবে যানবাহনের ভিড় না থাকায় এবার ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না যাত্রীদের

পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে ফিরছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারও মানুষ। গতকাল বুধবার থেকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে এসব মানুষের ভিড় বেড়েছে। ঘাটে যানবাহনের চাপ না থাকায় স্বস্তিতেই ফিরছেন তাঁরা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অনেকটাই ফাঁকা। বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে করে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ঘাটেœএসে নামছেন। যাত্রী নামিয়ে দিয়ে মাহেন্দ্র, বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন আবারও ফিরে যাচ্ছে। অন্যান্য বছর ঈদ–পরবর্তী যানবাহনের যে ভিড় এ ঘাটে থাকত, তা দেখা যায়নি এবার।

৫ নম্বর ফেরি ঘাটে রো রো (বড়) ফেরি বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, কেরামত আলী ও ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি রজনীগন্ধা যানবাহনের অপেক্ষায় ছিল। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট ছিল ফেরিশূন্য। ফেরি তিনটি ঘাটে ভেড়ানো থাকলেও যানবাহন তেমন না থাকায় সেগুলো দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। ঘাটে পৌঁছে সামনে যে ফেরি পাচ্ছেন, তাতেই উঠে পড়ছেন চালকেরা।

লঞ্চ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীরা সরাসরি লঞ্চে উঠে পড়ছেন। কাঠের সেতুতে অপেক্ষমাণ লোকজন টিকিট হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন। পন্টুনে অপেক্ষমাণ আনসার সদস্যরা যাত্রীদের লঞ্চে উঠতে সহযোগিতা করছেন।

আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাট প্রতিনিধি নুরুল আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের দুই দিন পর মঙ্গলবার থেকে ঢাকামুখী যাত্রীরা কর্মস্থলের দিকে ছুটতে শুরু করেছেন। তবে খুব বেশি চাপ নেই। আগামীকাল শুক্রবার ও পরের দিন শনিবার যাত্রীদের চাপ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাভারের পোশাক কারখানার কর্মকর্তা রাকিবুল হক স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সকাল ১০টার দিকে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে আসেন। ফেরির জন্য অপেক্ষাকালে তিনি বলেন, ‘ঈদের দুই দিন আগে পরিবারসহ পদ্মা সেতু দিয়ে বাড়ি ফিরেছি। ওই পথ দিয়ে না গিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে রওনা হলাম। পদ্মা সেতু দিয়ে সহজে ঢাকা পৌঁছানো গেলেও আবারও গাবতলী হয়ে সাভার আসতে হয়। বাড়তি ঝামেলা এড়াতে এই পথ দিয়ে রওনা হয়েছি। ঘাট এলাকায় এসে দেখি কোনো যানজট নেই।’

কুষ্টিয়া থেকে আসা লালন পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক বারেক শেখ বলেন, আগের মতো এখন আর ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকছে না। কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর অঞ্চলের গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পার হচ্ছে। ফেরিতে উঠতে যতটুকু সময়, অপেক্ষা ততটুকুই। এ ছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ঘাটে যানবাহনের চাপ নেই বললেই চলে। তবুও কর্তৃপক্ষ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে নয়টি রো রো (বড়), তিনটি ইউটিলিটি (ছোট) ও কে-টাইপ (মাঝারি) ফেরি চালু আছে। উভয় ঘাটে সার্বক্ষণিক পাঁচটি করে বড় ফেরি রাখা আছে। যানবাহন না থাকায় ফেরিগুলো বসে আছে।

শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ জানান, বুধবার সকাল ৬টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া থেকে ৫৮৬টি বাস, ৪০৯টি পণ্যবাহী গাড়ি, ১ হাজার ৫০২টি ছোট গাড়ি ও ৬৪৬টি মোটরসাইকেলসহ ৩ হাজার ১৪৩টি যানবাহন পার হয়েছে। পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় ৬৩৩টি বাস, ২৬১টি পণ্যবাহী গাড়ি, ১ হাজার ১৩০টি ছোট গাড়ি এবং ২২৬টি মোটরসাইকেলসহ ২ হাজার ২৫০টি যানবাহন পার হয়েছে।