Thank you for trying Sticky AMP!!

কুড়িগ্রামে গ্রামীণ খেলায় মেতেছিলেন কিষান–কিষানিরা

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় কৃষকদের ঈদ উৎসবের অনুষ্ঠানে এক কৃষক তৈলাক্ত কলাগাছ বেয়ে ওপরে উঠার চেষ্টা করছেন। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার উত্তর বড়ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে

কেউ তৈলাক্ত কলাগাছ বেয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা করছেন, কেউ ঝুড়িতে বল নিক্ষেপ করছেন, কেউ-বা লাঠি দিয়ে আঘাত করে হাঁড়ি ভাঙছেন। এ ধরনের গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী নানা খেলায় মেতে উঠেছিলেন কিষান-কিষানিরা। ঈদ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর বড়ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়।

‘কৃষকের ঈদ উৎসব’ নামে খেলাধুলার এই আয়োজন দেখতে কয়েক শ মানুষ ওই বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হন। কৃষকদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ব্যতিক্রমধর্মী এই খেলার আয়োজন করেছে ‘ফুল’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। খেলা শেষে ৩৫ জন বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

বড়ভিটা গ্রাম থেকে খেলা দেখতে আসা আয়নাল হক বলেন, ‘দিন দিন গ্রামীণ এসব খেলাধুলা হারিয়ে যাচ্ছে। ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রায় ১০ বছর আগে একবার এ রকম খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছিল। তখন আমি কিশোর ছিলাম। এত দিন পর আবার সেই শৈশবের খেলাধুলায় অংশ নিতে পেরে খুব ভালো লেগেছে। কৃষকদের হাঁড়িভাঙা, সাইকেল খেলা ও কিষানিদের সুই-সুতা খেলা ও বালিশ খেলা ছিল বেশ উপভোগ্য।’

কৃষক মো. নুর ইসলাম বলেন, ‘কৃষকদের নিয়ে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন সত্যি ভালো লেগেছে। আমরা এখানে শতাধিক কিষান-কিষানি গ্রামীণ খেলায় অংশ নিয়েছি। আমি হাঁড়িভাঙা খেলায় উপহার পেয়েছি। এবারে আমার ঈদের আনন্দ দ্বিগুণ হয়েছে।’

গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপী উত্তর বড়ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হাঁড়িভাঙা, বালিশ খেলা, সুই-সুতা খেলা, সাঁতার প্রতিযোগিতা, তৈলাক্ত কলাগাছ বেয়ে ওপরে ওঠা, ঝুড়িতে বল নিক্ষেপ, বালিশ খেলাসহ নানা ধরনের খেলার আয়োজন করা হয়।

গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপী উত্তর বড়ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হাঁড়িভাঙা, বালিশ খেলা, সুই-সুতা খেলা, সাঁতার প্রতিযোগিতা, তৈলাক্ত কলাগাছ বেয়ে ওপরে ওঠা, ঝুড়িতে বল নিক্ষেপ, বালিশ খেলাসহ নানা ধরনের খেলার আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া দর্শনার্থীদের আনন্দ দিতে ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় কৃষকদের নিয়ে আয়োজিত খেলাধুলায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করছেন অতিথিরা

কৃষকের ঈদ উৎসব অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম, সাংবাদিক সফি খান, রংপুর বিভাগীয় হিসাবরক্ষক মো. সাইদুল হক, ফুল-এর নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুল কাদের প্রমুখ।

ফুল-এর নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুল কাদের বলেন, ‘কৃষক হাসলে, বাংলাদেশ হাসে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে গতকাল ২২ ধরনের খেলার আয়োজন করা হয়েছে। দিনব্যাপী শতাধিক কিষান-কিষানি অংশ নেন। এ খেলাধুলার মাধ্যমে সমাজে বাল্যবিবাহ বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে চেষ্টা করেছি। এ ছাড়া গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে।’

জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক বলেন, কৃষকদের নিয়ে ফুলের ব্যতিক্রমী এ ক্রীড়া অনুষ্ঠান সত্যি দর্শকদের মন জুড়িয়েছে। গ্রামীণ এই খেলাধুলা বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের এগিয়ে আসা উচিত।