Thank you for trying Sticky AMP!!

সবাইকে ‘চমকে’ দিতে জার্মানি থেকে এসেছিলেন শিক্ষার্থী, পানিতে ডুবে মৃত্যু

আল ইসলাম

কিশোরগঞ্জের ভৈরব লঞ্চঘাট এলাকায় লঞ্চে ওঠার সময় মেঘনা নদীতে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে লঞ্চঘাট এলাকার নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর নাম আল ইসলাম (৩৩)। তিনি জার্মানিতে পড়াশোনা করতেন। পরিবারের সবাইকে চমকে দিতে ঈদের আগে তিনি দেশে এসেছিলেন। ১ মে তাঁর জার্মানিতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।

আল ইসলামের বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের চণ্ডীবের দক্ষিণপাড়ায়। তাঁর বাবা আলাউদ্দিন ভৈরব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক। আল ইসলাম প্রথম আলোর পাঠক সংগঠন ভৈরব বন্ধুসভার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ, ভৈরব বইমেলা পরিষদ ও কাকলি খেলাঘর আসরের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের কাছ থেকে জানা গেছে, দুই ভাই-বোনের মধ্যে আল ইসলাম বড় ছিলেন। অর্থনীতিতে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য তিনি তিন বছর আগে জার্মানিতে যান। কাউকে কিছু না জানিয়ে ঈদের কয়েক দিন আগে তিনি বাড়ি আসেন। গতকাল সন্ধ্যার দিকে তিন বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দিতে তিনি ভৈরব লঞ্চঘাটে যান। তিন বন্ধু লঞ্চে ওঠেন। সবার শেষে লঞ্চে উঠতে গিয়ে তিনি সিঁড়ি থেকে পড়ে নিখোঁজ হন। তিনি সাঁতার জানতেন না। তাঁকে বাঁচাতে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুরা পানিতে নামলেও খুঁজে পাননি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দলের সদস্যরা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি থেকে তুলে আনার পর আল ইসলামের নিথর দেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই আল ইসলামের মৃত্যু হয়।

গতকাল রাতে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আল ইসলামের বাবা আলাউদ্দিন মেঝেতে শুয়ে ছেলের জন্য কাঁদছেন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলছিলেন, ‘সারপ্রাইজ দিতে দেশে কেন আইলা বাবা? এখন তুমি আমারে কেমন সারপ্রাইজ দিলা?’

ভৈরব নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ভৈরবে ডুবুরি ছিল না। ফলে আমরা ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হতে পারলেও উদ্ধারকাজ শুরু করা যায়নি। আশুগঞ্জ থেকে ডুবুরি এনে উদ্ধারকাজ শুরু করতে হয়। পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে লাশ তুলে দেওয়া হয়েছে।’