Thank you for trying Sticky AMP!!

পদ্মা সেতু–সংলগ্ন চরে হচ্ছে ফসলের আবাদ

পদ্মা সেতু–সংলগ্ন এলাকায় কৃষকেরা ফসল আবাদ করেছেন। গতকাল শনিবার শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নে

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় নাওডোবায় পদ্মা সেতু–সংলগ্ন চরে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। সেখানে বাদাম, শর্ষে, বোরো ধান, বীজতলা, শীতকালীন শাক-সবজির আবাদ হচ্ছে। দীর্ঘ আট বছর পর নিজেদের জমিতে আবাদ করতে পেরে কৃষক খুশি।

জাজিরা উপজেলা কৃষি বিভাগ ও পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের জন্য জাজিরার বিভিন্ন এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করে সেতু বিভাগ। জাজিরার নাওডোবা এলাকায় ৪২ নম্বর পিয়ার (খুঁটি) হতে ২২ নম্বর পিয়ার পর্যন্ত ছিল ফসলি জমি। ওই জমির ওপর ৫০০ মিটার প্রশস্ত একটি চ্যানেল খনন করা হয়। পরে নদীর স্রোত ও ভাঙনে চ্যানেলটি আরও দেড় কিলোমিটার প্রশস্ত হয়। তখন সেখান দিয়ে নৌযান চলাচল শুরু করে। গত বর্ষার পর ওই স্থানটিতে বালু জমে ভরাট হয়ে গেছে। নভেম্বর থেকে সেখানে ফসলের আবাদ করতে থাকেন কৃষক।

গতকাল শনিবার জাজিরার নাওডোবায় গিয়ে দেখা যায়, ৪২ নম্বর পিয়ার থেকে ৩৮ নম্বর পিয়ার পর্যন্ত পদ্মায় পানি রয়েছে। সেখান দিয়ে নৌযান চলাচল করছে। আর ৩৮ নম্বর পিয়ার থেকে ২২ নম্বর পিয়ার পর্যন্ত অন্তত আড়াই কিলোমিটারব্যাপী চর পড়েছে। সেখানে বাদাম, শর্ষে, বোরো ধান, বীজতলা, লালশাক, পালংশাক ও মেথির আবাদ করেছেন কৃষক। দীর্ঘ আট বছর পর নিজেদের জমিতে আবাদ করতে পেরে কৃষক খুশি।

নাওডোবা ইউনিয়নের ফকিরকান্দি গ্রামের মোস্তফা চৌকিদারের ২০ বিঘা জমি জেগে উঠেছে। সেই জমিতে তিনি শর্ষে ও বোরো ধানের আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, এ বছর বর্ষার পর ওই জমিতে বালু জমে চর জাগে। সেই চরে আবার ফসল করতে পারব ভাবতেই পারেননি।

নদীবেষ্টিত বিভিন্ন চরের অনাবাদি ও পরিত্যক্ত জমিতে ফসল আবাদের জন্য জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের উদ্যোগে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে জাজিরায় কৃষি সমাবেশ করেন জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান। পরে কৃষকদের কৃষি যন্ত্র, বীজ ও সার দেওয়া হয়।

পাইনপাড়া এলাকার ঠান্ডু মাদবর পদ্মা সেতুর নিচের জমিতে শর্ষে ও লালশাকের আবাদ করেছেন। তিনি শনিবার তিন শিশুসন্তান নিয়ে লালশাক তুলে বাজারে বিক্রি করেন। ঠান্ডু মাদবর বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য তাঁদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বাকি যা ছিল, তা–ও ভাঙনে পদ্মায় বিলীন হয়েছে। এখন এ চর তাঁদের নতুন আশা দেখাচ্ছে।

চরে বোরো ধানের খেত

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জাজিরার পদ্মা সেতুর-সংলগ্ন চরটিতে ৩০০ হেক্টর জমি রয়েছে। তাঁরা পুরোটাই আবাদের আওতায় আনতে চান। এরই ধারাবাহিকতায় পদ্মা সেতুর নিচে অন্তত ৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে তাঁরা মনোযোগী হয়েছেন। কৃষি বিভাগের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ফসল উৎপাদনে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। পদ্মা সেতুর পাশে যে চর জেগে উঠেছে সেই জমির মালিকেরাই সেখানে আবাদ করছেন।