বন্যায় বইপত্র নষ্ট হওয়ায় পরীক্ষার আগে ১৫ দিন লেখাপড়া বন্ধ ছিল স্বর্ণালীর
দুই ভাই, দুই বোন সবাই লেখাপড়া করছে। পড়ালেখায় ভালো সবাই। কিন্তু মাস চারেক আগে বন্যায় সব বই নষ্ট হয়ে যায়। কঠিন এ সময়ে টাকার অভাবে নতুন বই কিনতে না পারায় ১৫ দিন লেখাপড়া বন্ধ ছিল স্বর্ণালী আক্তার ওরফে রিমার। এরপর একজন বইয়ের ব্যবস্থা করে দেন। মায়ের উৎসাহ আর নিজের প্রচেষ্টায় স্বর্ণালী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সুনামগঞ্জ শহরের সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
স্বর্ণালী আক্তারের বাড়ি সুনামগঞ্জ শহরের বড়পাড়া এলাকায়। মেয়ের ভালো ফলাফলে খুশি সবজি বিক্রেতা বাবা নুরুল আমিন ও মা পিয়ারা খানম। পিয়ারা খানম প্রথম আলোকে বলেন, সবজি বিক্রি করে নুরুল আমিন যা পান, তাতে সংসার চালানোই দায়। তাই খেয়ে না–খেয়ে দিন কাটে তাঁদের। এর ওপর সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হয়। এর–ওর কাছ থেকে ধারদেনা করে চালাচ্ছেন সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যয়।
পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে স্কুলের ক্লাসের বাইরে কখনো প্রাইভেট পড়তে পারেনি বলে জানায় মেধাবী শিক্ষার্থী স্বর্ণালী আক্তার। সে বলে, পরীক্ষা শুরুর আগে গত ১৬ জুন বন্যায় তাদের ভাঙাচোরা টিনের ঘরের ক্ষতি হয়। পানিতে সব বই নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য ১৫ দিন পড়াশোনা বন্ধ ছিল। হতাশ হয়ে পড়ে সে। মা পিয়ারা খানম মেয়ের বইয়ের জন্য পাগল হয়ে যান। এরপর শহরের একজন সংবাদকর্মী সব বইয়ের ব্যবস্থা করে দেন। রিমা জানায়, তাকে শিক্ষকেরা সহযোগিতা করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। যত কষ্টই হোক সে লেখাপড়া চালিয়ে যাবে। লেখাপড়া করে বড় সরকারি কর্মকর্তা হয়ে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর পাশাপাশি দেশের মানুষের সেবা করতে চায় সে।
সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, স্বর্ণালী মেয়েটা লেখাপড়ায় খুবই ভালো। তবে তার এগিয়ে যাওয়ার পথে পরিবারের আর্থিক দুরবস্থা একটা বাধা। সুযোগ পেলে সে আরও ভালো করবে।
আরও পড়ুন
-
যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছেলের মৃত্যু, কান্না থামছে মা–বাবার
-
রাজধানীর তাপমাত্রা আরও বাড়ল, চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ
-
শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ১৫ অভিযোগ, সুরাহা না পেয়ে প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন
-
মোস্তাফিজের এবারের আইপিএল: সাবেক দলের বিপক্ষে উইকেট যে কারণে কম
-
স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা ২ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ