Thank you for trying Sticky AMP!!

‘যোগ দাও যুক্তির মেলায়’ স্লোগান নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের ইকো পাঠশালা অ্যান্ড কলেজে চলছে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব

ঠাকুরগাঁওয়ে যুক্তি আর তর্কের মেলায় মেতেছে শিক্ষার্থীরা

শরতের সকাল। ঘড়ির কাঁটায় তখন আটটা। এরই মধ্যে আসতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। কারও কারও সঙ্গে শিক্ষক ও অভিভাবক। তাদের উদ্দেশ্য—যুক্তিতর্কের মেলায় অংশ নেওয়া।

‘যোগ দাও যুক্তির মেলায়’ স্লোগান নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের ইকো পাঠশালা অ্যান্ড কলেজে চলছে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব। রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে নিজ নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নেতৃত্বে যুক্তির লড়াইয়ে অংশ নিতে খুদে বিতার্কিকেরা হাজির হয়েছে সেখানে।

আজ শনিবার সকাল ৯টায় ইকো পাঠশালা ও বন্ধুসভার শিল্পীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বিতর্কের অনুষ্ঠান শুরু হয়। উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ইকো পাঠশালা অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সেলিমা আখতার। এ সময় তিনি বলেন, ‘বিতর্ক আমাদের শাণিত করে। নিজেদের যাচাই করার সুযোগ দেয়। আবার পাশাপাশি সৃজনশীল করে। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে। প্রথম আলোর এমন যেকোনো আয়োজনকে আমরা সব সময় সহযোগিতা করব।’

ঠাকুরগাঁও প্রথম আলো বন্ধুসভার সহসভাপতি ফরহাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উৎসবে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর প্রতিনিধি মজিবর রহমান খান। এ ছাড়া পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও প্রথম আলোর পঞ্চগড় প্রতিনিধি রাজিউর রহমান বক্তব্য দেন। শিক্ষার্থীদের মাদকের কুফল সম্পর্কে জানানোর পর মাদকের বিরুদ্ধে শপথবাক্য পাঠ করান রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সালেহুর রহমান। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মাজেদ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বিতর্ক নিয়ে নানা পরামর্শ ও প্রশ্নের উত্তর দেন।

বিতর্ক উৎসবে ঠাকুরগাঁওয়ের আটটি ও পঞ্চগড়ের দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৩০ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। প্রতিটি স্কুল থেকে চারজন করে বিতার্কিক ও কুইজে ছয়জন অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও এর বাইরেও কুইজে আরও শিক্ষার্থী অংশ নেয়। বিকেলে বিতর্ক উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান হবে।

মোট চারটি পর্বে বিতর্ক উৎসব হচ্ছে। প্রথম পর্বের বিজয়ী দলগুলো অংশ নেবে দ্বিতীয় পর্বে। এই পর্বের বিজয়ীরা তৃতীয় পর্বে অংশ নেবে এবং ওই পর্বের বিজয়ীরা অংশ নেবে চতুর্থ ও শেষ পর্বে। এখান থেকে একটি দল সেরা হিসেবে ঢাকার জাতীয় বিতর্ক উৎসবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। দলীয় বিতর্কের পাশাপাশি এককভাবে থাকছে ‘বারোয়ারি বিতর্ক’। আর ষষ্ঠ থেকে অষ্টম এবং নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে কুইজ প্রতিযোগিতা। এতেও চূড়ান্ত পর্যায়ের বিজয়ীরা অংশ নেবে জাতীয় উৎসবে।

বিতর্ক উৎসবে অংশ নেওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো ইকো পাঠশালা অ্যান্ড কলেজ, ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, আরকে স্টেট উচ্চবিদ্যালয়, কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গিলাবাড়ি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়, ঢোলারহাট এসসি উচ্চবিদ্যালয়, পুলিশ লাইনস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও বিপি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়।

পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসেছে আনিকা তাহসিন। অনুষ্ঠান শুরুর আগে সহযোগী অন্য প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে। এ সময় কথা হলে সে বলে, ‘এই বিতর্ক উৎসবে যোগ দেওয়ায় জন্য এক্সাইটেড ছিলাম। সময়মতো আসতে ভোর ছয়টায় ঘুম থেকে উঠে পড়ি। এখানে এসে বেশ ভালো লাগছে।’

পাশে বসে থাকা একই বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী আফিয়া আদিবা বলে, ‘অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমি তো ভোর পাঁচটায় উঠে পড়েছি। এখানে এসে বিতর্ক সম্পর্কে নতুন নতুন বিষয়ে ধারণা পেলাম। এটা বিতার্কিক হয়ে উঠতে কাজে লাগবে।’ আফিয়া আদিবার মা বলেন, এমন আয়োজন ছেলেমেয়েদের জড়তা কাটাবে। তাই সুযোগ পেয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে এসেছেন তিনি।

১০ শিক্ষার্থী নিয়ে প্রতিযোগিতায় এসেছেন গিলাবাড়ি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। এর মধ্যে চারজন বিতর্কে ও ছয়জন অংশ নেবে কুইজ প্রতিযোগিতায়। আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘স্কুলপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনেকবার বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছি। কিন্তু আঞ্চলিক পর্যায়ে এবারই প্রথম। স্কুল থেকে পুরো প্রতিযোগিতার বিষয়টি আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনি আমারও খুব ভালো লাগছে।’

পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব আয়োজনে সহযোগিতা করছে প্রথম আলো বন্ধুসভা। প্রচার সহযোগী হিসেবে আছে নাগরিক টেলিভিশন।