Thank you for trying Sticky AMP!!

বিদ্যুতের তারের জন্য ৪৫টি তালগাছ ন্যাড়া

তালগাছগুলোর পাতা কেটে দেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জয়পুরহাটের গণমঙ্গল বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের কর্মীরা।

বিদ্যুতের তারের সুরক্ষায় তালগাছ ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার নিশ্চিন্তা-পাঠানপাড়া সড়কে

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে একটি সড়কের দুই পাশের ৪৫টি তালগাছের পাতা কেটে দিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। বিদ্যুতের সরবরাহ লাইন সুরক্ষা দিতে গতকাল সোমবার নিশ্চিন্তা-পাঠানপাড়া সড়কের গণমঙ্গল থেকে পাঠানপাড়া পর্যন্ত সড়কের আধা কিলোমিটারে দুই পাশের তালগাছের মাথা ন্যাড়া করা হয়। এগুলো লাগানো হয়েছিল প্রায় এক যুগ আগে, উচ্চতা ছিল ৮-১০ ফুট।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে ওই সড়কে উজ্জ্বল নক্ষত্র ফাউন্ডেশন নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে সড়কের ৪৫টি তালগাছ হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি করছি।’

গতকাল সকাল নয়টা থেকে দুপুর পর্যন্ত নিশ্চিন্তা-পাঠানপাড়া সড়কের গণমঙ্গল থেকে পাঠানপাড়া পর্যন্ত সড়কের দুই পাশের তালগাছগুলোর পাতা কেটে দেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জয়পুরহাটের গণমঙ্গল বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের কর্মীরা।

এ বিষয়ে গণমঙ্গল বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের লাইন টেকনিশিয়ান শাহাদত হোসেন বলেন, ‘তালগাছগুলো সরবরাহ লাইনের নিচে পড়েছে। তালগাছে বজ্রপাত হয়। এতে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে সরবরাহ লাইনের ১০ ফুটের মধ্যে থাকা গাছের ডালপালা কাটতে বলা হয়েছিল। লোকজন না বুঝে কয়েকটি তালগাছের মাথা কেটে দিয়েছেন। এ ঘটনায় লোকজনকে বকা দিয়েছি।’

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ক্ষেতলাল সাব জোনাল কার্যালয়ের এজিএম নাজিম হোসাইন বলেন, ‘বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ক্ষতি করে, এমন গাছের ডালপালা কাটা হয়। কোনো গাছের মাথা ন্যাড়া করা হয় না। নিশ্চিন্তা-পাঠানপাড়া সড়কে তালগাছের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনাটি জানি না। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।’

সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) অধীন। গতকাল বেলা তিনটায় গিয়ে দেখা যায়, ওই সড়কের গণমঙ্গল বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র কার্যালয়ের উত্তর দিকে দুই পাশের তালগাছগুলোর মাথা ন্যাড়া অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে একটি মরা তালগাছ রয়েছে, যার পাতা আগেই কেটে দেওয়া হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক যুগ আগে ওই সড়কে তালগাছ রোপণ করা হয়েছিল। উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে এলাকার লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তালগাছগুলো রোপণ করেছিলেন। তিন বছর আগে সড়কের দুই পাশের তালগাছের সামান্য দূরত্বে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করা হয়। তখন স্থানীয় লোকজন বাধা দিয়েছিলেন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন তাঁদের কথা শোনেননি। গতকাল সকাল নয়টা থেকে গণমঙ্গল বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রের লোকজন সড়কের দুই পাশের তালগাছের ডাল ও মাথা কাটতে শুরু করেন। দুপুরের দিকে এক যুবক তালগাছের মাথা কাটতে বাধা দিয়েছিলেন।

পাঠানপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী রাসেল আহাম্মেদ বলেন, ‘তালগাছগুলো বড় হয়েছিল। হঠাৎ করেই গতকাল পল্লী বিদ্যুতের লোকজন তালগাছগুলো ন্যাড়া করে দিয়েছেন। এভাবে তালগাছ কাটতে বাধা দিয়েছিলাম। এরপর তাঁরা তিন-চারটি তালগাছ কাটেননি। ন্যাড়া করে দেওয়া প্রায় ৪৫টি তালগাছ মরে যাবে।’