Thank you for trying Sticky AMP!!

মিয়ানমারের ৯ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে এলেন বাংলাদেশে

নাফ নদী পেরিয়ে টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা। রোববার সকালে

কক্সবাজারের টেকনাফের ঝিমংখালী ও খারাংখালী সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৯ জন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ রোববার সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা মিয়ানমারের নাকফুরা এলাকা থেকে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া ওই ৯ জনকে সীমান্তের একটি ফাঁড়িতে তাঁদের রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Also Read: কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আরও শতাধিক বিজিপি সদস্য আশ্রয় নিলেন নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আশ্রয় নেওয়া ৯ বিজিপি সদস্যের মধ্যে দুজন আহত অবস্থায় এসেছেন। ওই দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) লড়াই-সংঘাত চলছে টানা দুই মাস ধরে।

Also Read: ঈদের দুই দিনও মিয়ানমার সীমান্তে বিস্ফোরণে কাঁপল টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন

নাফ নদী পেরিয়ে টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের আরও তিন বিজিপি সদস্য। রোববার সকালে

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, চলমান লড়াইয়ে ইতিমধ্যে মংডু টাউনশিপের উত্তর-দক্ষিণ এবং পূর্ব পাশের রাচিডং টাউনশিপসহ ১২টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। কিছুদিন ধরে বুচিডং ও মংডু টাউনশিপ দখলের জন্য শক্তি প্রয়োগ করছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। দখলে নেওয়া সীমান্তচৌকি ও পুলিশ ফাঁড়ি পুনরুদ্ধারে সরকারি বাহিনী বিমান হামলা এবং শক্তিশালী মর্টার শেল নিক্ষেপ করলেও তা কাজে আসছে না। সংঘাত দিন দিন নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।

এদিকে গতকাল শনিবার রাত ১০টা থেকে আজ রোববার ভোর সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল হামলা হয়েছে। বিকট বিস্ফোরণের শব্দ নাফ নদীর এপারে হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উত্তরপাড়া, লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কাঞ্জরপাড়া, হ্নীলা, মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, পুরান বাজারসহ কয়েকটি গ্রামে শোনা গেছে। ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটান সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা।

Also Read: পালিয়ে আসা ১৭৯ সীমান্তরক্ষীর পরিচয় শনাক্ত ও তথ্যভান্ডার তৈরি চলছে

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা দিয়ে মিয়ানমারের কয়েকজন বিজিপি সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আরও অর্ধশতাধিক বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য সীমান্তে অপেক্ষা করছেন।

চলমান সংঘাতের কারণে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সদস্যরা কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৩ জন সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এর আগে ১১ মার্চ আশ্রয় নেন আরও ১৭৭ জন বিজিপি ও সেনাসদস্য। তাঁরা সবাই নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবি হেফাজতে রয়েছেন। এর আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।

Also Read: রাখাইনের রাথিডং শহর দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি