Thank you for trying Sticky AMP!!

আখাউড়া থেকে প্রথমবার আগরতলায় গেল ট্রেন, ১ নভেম্বর উদ্বোধন

আখাউড়া থেকে থেকে ভারতের আগরতলায় যাওয়া প্রথম ট্রেন। আজ দুপুর ১২টার দিকে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনে

আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে প্রথমবারের মতো ট্রেন চালানো হয়েছে। আজ সোমবার আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে একটি ট্রেন ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত চলাচল করে। চট্টগ্রাম পাহাড়তলী লোকোশেডের লোকোমাস্টার মাহফুজুর রহমান এই ট্রেন চালিয়ে আগরতলায় যান। এটি ছিল আনুষ্ঠানিক ট্রায়াল।

এর আগে এ রেলপথের শুধু বাংলাদেশ অংশে একাধিকবার পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়েছে। এই রেলপথ ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পাশাপাশি গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনে প্রথমবারের মতো ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতাও শুরু হয়েছে।

Also Read: আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে প্রথমবারের মতো চলল ‘গ্যাং কার’

গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্টেশনের আউটার থেকে দুটি গার্ডব্রেক ও তিনটি মালবাহী ওয়াগনসহ ইঞ্জিন নিয়ে লোকোমোটিভ মাস্টার মাহফুজুর রহমান গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনে পৌঁছান। দুপুর ১২টা ১৯ মিনিটে মালবাহী ওয়াগন নিয়ে ট্রেনটি গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে চূড়ান্ত ট্রায়াল রান শুরু করে। ১২টা ৪৫ মিনিটে ট্রেন আখাউড়ার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর সীমান্তে পৌঁছে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যদের সঙ্গে নথিপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১২টা ৫৫ মিনিটে ট্রেন আগরতলার নিশ্চিন্তপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে শিবনগর পর্যন্ত এই ট্রেন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিতে চালানো হয়েছে।

ভারতের আগরতলার উদ্দেশে যাচ্ছে বাংলাদেশের ট্রেন। আজ দুপুর পৌনে একটার দিকে আখাউড়ার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর সীমান্তে

লোকোমাস্টার মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে ছিলেন রেলওয়ের কুমিল্লা অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী মজুমদার, লাকসাম রেলওয়ে স্টেশনের ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মো. মহিউদ্দিন পাটোয়ারী, সহকারী লোকোমাস্টার মো. রোকন মিঞা, ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) মো. আবদুর রহিম ও রবিন মজুমদার এবং ট্রেনের পরীক্ষক রুবেল মিয়া। রেলের এই সাতজন গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনে সকাল ১০টায় ইমিগ্রেশনের কাজ সম্পন্ন করেন। সেখানে ইমিগ্রেশনের দায়িত্বে ছিলেন উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রাজ্জাক।

Also Read: আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল পেছাল

রেলপথে পণ্য পরিবহন খরচ কম হওয়ায় এই প্রকল্প চালু হলে দুই দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। আগামী ১ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চ্যুয়ালি আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ উদ্বোধন করবেন।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ট্রেনে আগরতলা থেকে কলকাতা পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার, যা পাড়ি দিতে সময় লাগে ৩১ থেকে ৩৬ ঘণ্টা। আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প চালু হলে আগরতলা থেকে আখাউড়া হয়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে কলকাতা যাতায়াতে দূরত্ব ও সময়—উভয়ই কমবে।

আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে প্রথমবার ট্রেন চলাচল করেছে। এই উপলক্ষে গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতাও শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের (বাংলাদেশ অংশে) পরিচালক আবু জাফর মিয়া বলেন, ১ নভেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এই রেলপথে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন। আপাতত পণ্যবাহী ট্রেন চলবে। পর্যায়ক্রমে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে। আগামী এক মাসের মধ্যে গঙ্গাসাগর ইমিগ্রেশন ভবনসহ বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে।

Also Read: আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে ব্যবসা-বাণিজ্য সমৃদ্ধ হবে: ভারতীয় হাইকমিশনার

এক প্রশ্নের জবাবে আবু জাফর বলেন, ‘গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে শিবনগর সীমান্ত পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেললাইন বসানো হয়েছে। ভারতের অংশে মিটারগেজ। আপাতত আমাদের এখান থেকে ট্রেন ভারতের নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত যেতে পারবে।’ ভারতের ট্রেন বাংলাদেশ হয়ে কবে কলকাতায় যাবে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আখাউড়া থেকে টঙ্গী পর্যন্ত রেলপথ ডুয়েলগেজ করা হলে ট্রেন কলকাতায় যাবে।

প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারতের নয়াদিল্লির টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের বাংলাদেশপ্রধান (কান্ট্রি হেড) শরৎ শর্মা বলেন, ‘এটি দুই দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক পরীক্ষামূলক ট্রেনের চলাচল। এর মাধ্যমে আমরা দেখব এই রেলপথের ট্র্যাক কতটুকু উপযোগী। অন্যান্য জিনিস ঠিকঠাক আছে কি না, সেটিও দেখব।’