Thank you for trying Sticky AMP!!

জয়পুরহাটে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চার সাংবাদিককে পেটানোর অভিযোগ

জয়পুরহাটে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলায় আহত চার সাংবাদিক। শনিবার হাসপাতালে

জয়পুরহাটে পাঁচবিবির ফিচকাঘাট এলাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জমিতে জোরপূর্বক মাটি কাটা নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চার সাংবাদিক হামলা ও বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন। স্থানীয় সাংবাদিকেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

শনিবার বেলা আড়াইটায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। মহীপুর হাজী মহসীন সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ও তাঁর ক্যাডার বাহিনী এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা।

হামলা ও মারধরের শিকার সাংবাদিকেরা হলেন মাছরাঙা টেলিভিশনের জেলা সংবাদদাতা আল মামুন (৩৫), দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার–এর জেলা প্রতিনিধি জুয়েল শেখ (৩৮), বাংলার দূত–এর জেলা প্রতিনিধি আবদুর রাজ্জাক (৩৫) ও সংবাদ সারাবেলা–এর পাঁচবিবি প্রতিনিধি বাবুল হোসেন (৩৭)।

খবর পেয়ে ছাত্রলীগের নেতা মাহমুদুল ও তাঁর লোকজন সেখানে আসেন। তাঁরা অতর্কিতভাবে সাংবাদিকদের লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারপিট করেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকেরা জানান, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ফিচকাঘাট এলাকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী মাহাতোদের একটি জমিতে মহীপুর হাজী মহসীন সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান আইন অমান্য করে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কাটার কাজ করছিলেন। মাহাতো জনগোষ্ঠীর মানুষের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তাঁরা চার সাংবাদিক। খবর পেয়ে ছাত্রলীগের নেতা মাহমুদুল ও তাঁর লোকজন সেখানে আসেন। তাঁরা অতর্কিতভাবে সাংবাদিকদের লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারপিট করেন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ও সাংবাদিকেরা তাঁদের উদ্ধার করে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন। এরপর তাঁদের জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে তাঁরা চিকিৎসাধীন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাছরাঙা টেলিভিশনের জেলা সংবাদদাতা আল মামুন বলেন, ‘ফিচকাঘাটের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিরোধপূর্ণ জমিতে খননের কাজ করছিলেন ছাত্রলীগের নেতা মাহমুদুল হাসান। আমরা খবর পেয়ে চারজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে যাই। এক্সকাভেটর যন্ত্রের চালকের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এমন সময় ছাত্রলীগের নেতা মাহমুদুল ১০ থেকে ১২ জনকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে এসে আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে মারধর করেন। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকেরা ছুটে এসে আমাদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করব।’

সাংবাদিক আল কারিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত চার সহকর্মীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেই। এরপর সেখান থেকে তাঁদের জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমার এক্সকাভেটর রয়েছে। ভাড়ায় একজনের পুকুরের সংস্কারকাজ করছিলাম। চারজন সাংবাদিক আমার সাইটে গিয়ে এক্সকাভেটর যন্ত্রের চালককে কাজ বন্ধ করতে বলেন। একপর্যায়ে তাঁরা টাকাও দাবি করেন। এ নিয়ে গণ্ডগোলের একপর্যায়ে মারামারি হয়। আমি পাঁচবিবির একজন সাংবাদিককে মারপিট করেছি। জয়পুরহাটের সাংবাদিকদের গায়ে হাত তুলিনি। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছি।’

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারী সুর্বণা মাহাতো বলেন, ‘জমি নিয়ে আমাদের সঙ্গে রায়হান চৌধুরীর বিরোধ চলছে। আমরা আদালত থেকে রায় পেয়েছি। সেই জমিতে পুকুর খনন করা হচ্ছে। আমরা বাধা দিয়েছি, তাতে কোনো কাজ হয়নি। এ কারণে সাংবাদিকদের ঘটনাটি জানিয়েছিলাম। সাংবাদিক আসার পর ভেকু মেশিনের মালিক ছাত্রলীগের নেতা তাঁদের মারধর করেছেন।’

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফয়সাল বিন আহসান সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সাংবাদিকদের মারপিটের কথা জেনেছি। এ ঘটনায় দুই পক্ষই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এখনো কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।