Thank you for trying Sticky AMP!!

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় উব্দাখালী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার ডুবিয়ারকোনা এলাকায়

কলমাকান্দায় নদীর পানি কমছে, তবে ধীরগতিতে

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করছে। গতকাল সোমবার রাত আটটার পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি কমলেও এর গতি খুবই ধীর। অন্যদিকে উব্দাখালী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উব্দাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৬ দশমিক ৫৫ মিটার। জেলায় গতকাল বিকেলে থেকে মাঝারি বা ভারী বৃষ্টিপাত হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান প্রথম আলোকে বলেন, কলমাকান্দায় পানি কিছুটা কমছে, তবে তা ধীরগতিতে। কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পানি আজ বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে ওই পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। আশা করা যাচ্ছে, ভারী বৃষ্টিপাত না হলে পানি আর বাড়বে না। তিনি জানান, ঢলের পানি খালিয়াজুরীর বিভিন্ন হাওর দিয়ে ইটনা, মিঠামইন ও ভৈরব হয়ে মেঘনা নদীতে চলে যাবে।

Also Read: কলমাকান্দায় নদীর পানি বেড়েছে, ৫৬টি বিদ্যালয়ের মাঠ প্লাবিত

স্থানীয় বাসিন্দা ও পাউবো সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনায় গত বুধবার থেকে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলায় ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বেড়ে যায়। এর মধ্যে কলমাকান্দায় উব্দাখালী নদীর পানি শনিবার সকাল থেকে বিপৎসীমার ওপরে চলে যায়। এতে করে উপজেলার পোগলা, বড়খাপন, কৈলাটি, খারনৈসহ প্রায় আটটি ইউনিয়নেরই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। পোগলার কালাকোনা, জীবনপুর, গোয়াতলা, কৈলাটি, মঙ্গলসিধ, কৈলাটি ইউনিয়নের খলা, চারালকোনা, বাবনীকোনা, সনুরা, কনুরা, সাকুয়া ইন্দ্রপুর, বেনুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। গ্রামীণ রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় স্থানীয় লোকজন যাতায়াতের ভোগান্তিতে পড়েন। গবাদিপশুর খাবার সংগ্রহ নিয়েও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা এবং মাঠেও বন্যার পানি উঠেছে।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার বেশ কিছু এলাকার রাস্তায় পানি থাকায় মানুষ দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছেন। আজ সকালে কলমাকান্দা-বরুয়াকোনা সড়কের খাসপাড়া এলাকায়

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন জানান, উপজেলার ধীতপুর, বাহাদুরকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাইজপাড়া, খলা-১, খলা-২, বড়খাপন, চৌহাট্টা, বাউসারি, হাইলাটি, রিকা, পোগলা, ভাটিপাড়াসহ অর্ধশতাধিক বিদ্যালয়ের মাঠে বন্যার পানি ঢুকেছে।

Also Read: নেত্রকোনায় উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

উপজেলা প্রকৌশলী শুভ্রদেব চক্রবর্তী জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় উপজেলায় কাচা-পাঁকা মিলিয়ে ৬৭৮ কিলোমিটার সড়ক আছে। এর মধ্যে উপজেলা মোড়-মুক্তিরচর, বাহাদুরকান্দা-বাসাউড়া, ঘোষপাড়া-হরিণধরা, কলমাকান্দা-বিশরপাশা পাকা রাস্তা, গোরস্থান-সাউদপাড়া, গজারমারী-খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদ, গোবিন্দপুর-রানীগাঁও কাঁচা রাস্তাসহ প্রায় ৩২ কিলোমিটার অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। অবশ্য এসব রাস্তা অনেকটাই নিচু এলাকায়।

কৈলাটি ইউপি চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদিন আজ সোমবার জানান, তাঁর ইউনিয়নের বেনুয়া, খলা, চারালকোনা, সনুড়া, সাকুয়া ইন্দ্রপুরসহ বেশ কিছু গ্রামে পানি ঢুকেছে। নিচু এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। তবে কোনো ঘরে পানি ঢোকেনি। গতকাল সোমবার রাত থেকে পানি হালকা কমে এখন স্থির আছে বলে জানান তিনি।

Also Read: ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নেত্রকোনার নদ-নদীতে পানি বাড়ছে

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও মানুষের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেনি। কিছু রাস্তাঘাট ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি আছে। তবে ধীরগতিতে হলেও পানি নেমে যাচ্ছে।