Thank you for trying Sticky AMP!!

খুলনার দাকোপ উপজেলার বাণীশান্তা এলাকার কৃষিজমিতে আমন ধান রোপণ করেছেন কৃষকেরা

কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে ধান রোপণ কর্মসূচি

মোংলা বন্দর ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় পশুর নদ খননের বালুর কবল থেকে খুলনার দাকোপ উপজেলার বাণীশান্তা এলাকার কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে বাণীশান্তা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এ বৈঠক হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাণীশান্তা ইউনিয়ন কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এর আগে বাণীশান্তা-ভোজনখালী বিলে ধান রোপণ কর্মসূচি হয়।

‘কৃষি বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’ স্লোগান নিয়ে এ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাপা নেতা ও কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সংগঠক কৃষ্ণপদ মণ্ডল। কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাপা কেন্দ্রীয় নেতা মো. নূর আলম শেখ।

Also Read: পশুর নদ খননের বালু থেকে ফসলি জমি বাঁচাতে নাগরিক সমাবেশ

ধান রোপণ কর্মসূচি চলাকালে বক্তারা বলেন, ‘আমরা জান দেব, তবু কৃষিজমিতে পশুর নদ ড্রেজিংয়ের বালু ফেলতে দেব না। বাণীশান্তার ৩০০ একর তিন ফসলি কৃষিজমিকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ড্রেজিং প্রকল্পে অনাবাদি এবং ডোবা হিসেবে উল্লেখের মাধ্যমে মিথ্যাচার করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার কৃষিজমি রক্ষার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও পশুর নদ ড্রেজিংয়ের প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কিছু কর্মকর্তা তা উপেক্ষা করছেন। বালু ফেলার জায়গার বহু বিকল্প থাকার পরও মোংলা বন্দরের কিছু কর্মকর্তার উদ্দেশ্য হচ্ছে বাণীশান্তার ৩০০ একর তিন ফসলি কৃষিজমি, যা দুঃখজনক।’ যেকোনো মূল্যে কৃষিজমি ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বাণীশান্তার কৃষকেরা প্রতিহত করবেন বলে কর্মসূচিতে জানানো হয়।

ধান রোপণে সংহতি শেষে কৃষিজমি রক্ষার আন্দোলনকে বেগবান করতে বাণীশান্তা গ্রামে উঠান বৈঠক করেন নেতারা। উঠান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাণীশান্তা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কৃষকনেত্রী পাপিয়া মিস্ত্রি। উঠান বৈঠকে বক্তারা কৃষিজমি রক্ষার চলমান আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণ এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনার আহ্বান জানান।

কৃষিজমি রক্ষার এসব কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণীশান্তা ইউনিয়ন কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা সত্যজিৎ গাইন, হিরন্ময় রায়, মনোজিত কুমার দেব, সঞ্জীব মণ্ডল, ইউপি সদস্য জয় কুমার মানিক, বাপা নেতা হাছিব সরদার, কৃষক বৈশাখী মণ্ডল প্রমুখ।

Also Read: দাকোপে বালুর কবল থেকে কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে সভা

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, খুলনার দাকোপ উপজেলার পশুর নদের পাড়ের বাণীশান্তা ইউনিয়নের মানুষের আয়ের একমাত্র উৎস কৃষি। তবে মোংলা বন্দর চ্যানেলের গভীরতা বাড়ানোর জন্য পশুর নদ খনন করে বালু ফেলতে তাঁদের সেই আবাদি জমি হুকুমদখল করা হয়েছে। এতে জীবিকা হারানোর আশঙ্কায় তাঁরা তাঁদের এ জমিতে বালু ফেলতে দিতে রাজি নন। জমিতে পশুর নদের বালু ফেললে কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত ও বাস্তুচ্যুত হবে বলে দাবি কৃষকদের। তাই বিকল্প জায়গায় বালু ফেলার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা।

এদিকে জেলা প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে হুকুমদখল করা জমিতে কার্যক্রম শুরু করতে তৎপরতা চালাচ্ছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে দুই সপ্তাহ ধরে দুটি পক্ষ দফায় দফায় মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসছে। কৃষকেরা একদিকে তাঁদের জমিতে আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন, অন্যদিকে রাত জেগে জমি পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি মিছিল, সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন থেকে কৃষকদের নানা রকম হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে জমি রক্ষা কমিটির নেতারা অভিযোগ করেছেন। হুমকির অভিযোগ বানোয়াট বলে দাবি করেছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা।