Thank you for trying Sticky AMP!!

থানায় ‘হামলা’র হোতা ‘নুরু বাহিনীর’ প্রধানকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে অব্যাহতি

বগুড়ায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে মো. নুরুজ্জামানসহ (সাদা পাঞ্জাবি) অন্য আসামিরা। গতকাল রোববার তোলা

বগুড়ার শাজাহানপুর থানায় ‘হামলা’র হোতা ‘নুরু বাহিনীর’ প্রধান নুরুজ্জামানকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নুরুজ্জামান শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। শাজাহানপুরের দাপুটে ‘নুরু বাহিনী’র প্রধান তিনি। উপজেলা সদরের মাঝিড়া থেকে শুরু করে বনানী, ফুলতলা, নয়মাইল, আড়িয়াবাজার, সাবরুলসহ উপজেলাজুড়ে তিনি দাপিয়ে বেড়ান।

গত শনিবার রাতে শাজাহানপুর থানায় ঢুকে অস্ত্র মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নুরুজ্জামানসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হামলায় ৮ পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনার পর নুরুজ্জামান ও তাঁর সহযোগীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৫টি গুলিসহ দুটি বিদেশি পিস্তল, মাদক ও দেশি অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নুরুজ্জামানসহ ৪৫ জনকে আসামি করে পৃথক আইনে দুটি মামলা হয়েছে।

Also Read: থানায় ‘হামলা’ চালিয়ে গ্রেপ্তার ‘নুরু বাহিনীর’ প্রধানের উত্থান যেভাবে

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, থানায় হামলা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে এলাকা থেকে গা ঢাকা দেওয়ায় নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

সন্ধ্যায় ‘ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি, রাতে অব্যাহতি

নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল রোববার বিকেলে নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, শনিবার রাতে অস্ত্রসহ একজন তালিকাভুক্ত অপরাধীকে আটক করে থানায় নেওয়ার পর তাঁকে ছিনিয়ে নিতে নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে অর্ধশত সন্ত্রাসী থানায় আক্রমণ করে। এ সময় পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলার মূল হোতা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান। তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলনের পর গতকাল সন্ধ্যায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি ত্যাগী নেতা। তাঁর মতো নেতা সংগঠনের প্রয়োজন। জামায়াতের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। উল্টো তাঁর কারণেই শাজাহানপুরে জামায়াত-বিএনপি কোণঠাসা। নুরুজ্জামান ষড়যন্ত্রের শিকার বলেও সাজেদুর দাবি করেন।

সন্ধ্যায় এ বক্তব্য দেওয়ার পর রাত নয়টার দিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমানের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক মশিউল রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের একজন কর্মীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান সদলবল থানায় গিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ এবং পুলিশের কাজে বাধা প্রদান করে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশের সৃষ্টি করেছেন। যা সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নুরুজ্জামানকে শাজাহানপুর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

জুলফিকার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নুরুজ্জামানকে থানায় হামলার মামলায় গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রত। সংগঠনের ভাবমূর্তির স্বার্থে এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তাঁকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।’ একই ঘটনায় গ্রেপ্তার শাজাহানপুর উপজেলা শাখার অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করার বিষয়ে জুলফিকার রহমান বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে অন্যদের বিরুদ্ধে পরবর্তী সময়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।