Thank you for trying Sticky AMP!!

ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে সাগরে নিখোঁজ বরগুনার সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের গাজী মাহমুদ এলাকার নান্টু খানের পরিবার

সাগরে নিখোঁজ ২৫ জেলে ২০ দিনেও ফেরেনি, বিপাকে পরিবার

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ১৭ নভেম্বর বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার দুটি ট্রলারের ২৫ জেলে নিখোঁজ হন। তাঁদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

ঘুর্ণিঝড় মিধিলির কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া দুটি মাছ ধরার ট্রলারের নিখোঁজ ২৫ জন জেলের সন্ধান ২০ দিনেও পাওয়া যায়নি। এতে এসব জেলের পরিবারের সদস্যরা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এর মধ্যে কয়েকটি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নিখোঁজ থাকায় তারা ভীষণ কষ্টে আছে। 

বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতি জানায়, নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে ১৭ জন জেলে বরগুনার পাথরঘাটার চরদুয়ানী এলাকায় রফিকুল ইসলামের এফবি এলাহী ভরসা নামে একটি ট্রলারে করে মাছ ধরার জন্য বঙ্গোপসাগরে যান। গত ১৭ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কবলে পড়ে ওই ট্রলারের সব জেলে নিখোঁজ হন। এ ছাড়া ওই ঘূর্ণিঝড়ের কয়েক দিন আগে পাথরঘাটার এফবি মায়ের দোয়া নামের একটি ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে যায়। ১৭ নভেম্বর ঝড়ে ওই ট্রলারটি সাগরে ডুবে যায়। এতে ওই ট্রলারে থাকা আটজন জেলে নিখোঁজ হন।

Also Read: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: ৪ দিনেও বরগুনার ২৫ জেলের খোঁজ পাওয়া যায়নি

এফবি এলাহী ভরসা ট্রলারের নিখোঁজ ১৭ জেলের মধ্যে ১৬ জনের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়। এর মধ্যে নলটোনা ইউনিয়নের গাজী মাহমুদ গ্রামের সাতজন রয়েছেন। এরা হলেন আবদুর রব মিয়া, মনির হোসেন, খলিলুর রহমান,লিটন হাওলাদার,শহিদুল ইসলাম, মো. কালুমিয়া ও সিদ্দিক  মৃধা। ঢলুয়া ইউনিয়নের ৯ জন। তাঁরা হলেন আবদুল খালেক বয়াতি, আউয়াল বিশ্বাস, আল আমিন, নান্টু খান, মো. ইউনুস, মো. সোবাহান খান, মো.মাহতাব, মো.কামাল ও মো.  ফারুক ।   

বরগুনা সদর উপজেলা নলটোনা ইউনিয়নের নিখোঁজ জেলে মো.লিটন হাওলাদারের (৪২) স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, ‘ঝড়ের এক সপ্তাহ আগে বাড়ি থেকে আমার স্বামী সাগরে মাছ ধরতে গেছে। ঝড়ের আগের দিন তার সঙ্গে মুঠোফোনে শেষ কথা হয়। এর পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ নেই। আমি আমার স্বামীকে হারিয়ে ফেলেছি। যাওয়ার সময় ঘরে পাঁচ কেজি চাল রেখে গেছে। যাওযার সময় তাকে বলছিলাম, এই চাল শেষ হয়ে গেলে আমি ছেলেমেয়েদর কী খাওয়াব। তখন সে আমাকে বলছিল, “ফিরে এসে আমি চাল কিনে দেব।” আমার স্বামী আর ফেরেনি। আর মনে হয় জীবনেও চাল কেনা হবে না তার। ছেলে-মেয়েকে যে স্কুলে পাঠামু, এখন সে উপায়ও নেই। আয়ের মানুষটা তো নাই হয়ে গেছে। আমি এখন অথই সাগরে পড়ছি।’ 

Also Read: বঙ্গোপসাগরে দুটি ট্রলার নিখোঁজ, একটি ট্রলারডুবি, জেলে নিখোঁজ ৩৯

নলটোনা ইউনিয়নের নিখোঁজ জেলে মনির হোসেনের ছেলে হাসিব বলে, ‘বন্যার (ঘূর্ণিঝড়) আগের দিন বাবার সঙ্গে হয়েছিল আমাদের।
বাবাই আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। বর্তমানে আমাদের অনেক কষ্ট করে চলতে হচ্ছে।’

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে নিখোঁজ জেলেদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ঝড়ের কবলে পড়ে এমভি মায়ের দোয়া নামের ট্রলারটি সাগরে ডুবে গেছে আর এলাহী ভরসা নামের ট্রলারটি ডুবে গেছে না ভারতে  চলে গেছে, তা বলা যাচ্ছে না।

 বরগুনা সদরের ইউএনও শামীম মিঞা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে নিখোঁজ জেলেদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাঁরা মারা গেছেন কি না, তাও বলা যাচ্ছ না। নিখোঁজ জেলেদের তালিকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। 

Also Read: ২১ ঘণ্টা সাগরে ভেসে ফিরেছেন নিখোঁজ ১৪ জেলে