Thank you for trying Sticky AMP!!

রাজশাহী সরকারি সার্ভে ইনস্টিটিউটের ছাত্রীনিবাসের ভবন। গত রোববার পবা উপজেলার কচুয়াতৈল এলাকায়

ছাত্রীনিবাসে থাকেন অন্যরা

এই প্রতিষ্ঠানের কাছে কোনো মেস নেই। দূর থেকে ছাত্রীদের এই ক্যাম্পাসে আসতে হয়। 

প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রাবাসে ছাত্ররা থাকেন এক টাকা ভাড়ায়। ছাত্রীদের জন্যও বানানো হয়েছে ছাত্রীনিবাস। তবে সেখানে তাঁরা থাকতে পারেন না। তাঁদের জন্য নির্মিত সরকারি ছাত্রীনিবাসে থাকেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী। এই চিত্র রাজশাহী সরকারি সার্ভে ইনস্টিটিউটের। এটি রাজশাহীর পবা উপজেলার কচুয়াতৈল এলাকায় অবস্থিত।

সার্ভে ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি একাডেমিক ভবন, চারতলাবিশিষ্ট ছাত্রাবাস এবং একতলাবিশিষ্ট একটি ছাত্রীনিবাস নির্মাণ করে প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীসংখ্যা ৩৯০ জন। তাঁদের মধ্যে ছাত্র ২২১ জন, ছাত্রী ৬৯ জন। প্রতিষ্ঠানটিতে একটিমাত্র বিভাগ, সার্ভেয়ার। এই বিভাগে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়। ৮ পর্বের চার বছরের কোর্স। তবে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হতে চাইলে তাঁরা সরাসরি তৃতীয় পর্বে ভর্তির সুযোগ পান। অবশ্য আসন ফাঁকা থাকার শর্তে এই সুযোগ দেওয়া হয়।

ছাত্রাবাসে ৯৪ জন শিক্ষার্থীর আবাসনব্যবস্থা রয়েছে। তাতে কখনো ৭০ জন, কখনো ৯৪ জনই থাকেন। ছাত্রীনিবাসে পাঁচটি কক্ষ, একটি টিভিরুম ও একটি ডাইনিংরুম আছে। এখানে ২০–৩০ জন ছাত্রীর আবাসনসুবিধা রয়েছে। ২০২২ সালের শুরুতে এই প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগ দেন হারুন অর রশিদ। শুরু থেকেই তিনি ছাত্রীনিবাসে রয়েছেন।

এরপর ক্রাফট ইন্সপেক্টর ও গ্রন্থাগারিক সাদমান সাকিবও এই ছাত্রীনিবাসে থাকতে শুরু করেন। একইভাবে পরিছন্নতাকর্মী রেজাউল করিমও সেখানে থাকেন। গত রোববার দুপুরে ওই ছাত্রীনিবাসে গিয়ে বিভাগীয় প্রধান হারুন অর রশিদকে পাওয়া যায়নি। তিনি ঢাকায় ছিলেন। সাদমান সাকিবকেও পাওয়া যায়নি। তবে কথা হয় রেজাউল করিমের সঙ্গে। তিনি দাবি করেন, তিনি স্টোররুমে থাকেন। সেখানে আলাদা বিদ্যুতের মিটার রয়েছে। বিদ্যুৎ বিলটা শুধু দিতে হয়। মোটকথা, তাঁরা বিনা ভাড়ায় থাকেন।

ক্যাম্পাসে কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, প্রতিষ্ঠানের কাছে কোনো মেস নেই। দূর থেকে তাঁদের এই ক্যাম্পাসে আসতে হয়। মেসে ভাড়াবাবদ  মাসে অন্তত আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। ক্যাম্পাসের ভেতরে ছাত্রীনিবাসে থাকতে পারলে তাঁদের অনেক সুবিধা হতো। মেসভাড়া ও যাতায়াত খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি সময়ও লাগত কম।

মুঠোফোনে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এটা পরিত্যক্ত ভবন। সরকার নির্মাণ করে দিয়েছে। এখানে কোনো বাউন্ডারি ওয়াল (সীমানাপ্রাচীর) নেই। আমাকে জোর করে কর্তৃপক্ষ এখানে রেখেছে। আমি প্রতিষ্ঠান পাহারা দিই।’ সদ্য নির্মিত একটি ভবন কীভাবে পরিত্যক্ত হয়, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটার উত্তর কে দেবে? প্রতিষ্ঠানটি জেলা পরিষদের অধীন ছিল। দুই বছর আগে সরকারি হয়েছে। আরও তিনটি ভবন হবে। অনেক কাজ বাকি।’

এ ব্যাপারে রাজশাহী সরকারি সার্ভে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রীদের থাকার জন্য একতলাবিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস তৈরি করা হয়েছে। তবে সেখানে থাকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। জনবল নিয়োগ হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি সরকারি হিসেবে গেজেট হয়েছে। এখন আর্থিক কোড সৃষ্টি হবে, তারপর নিয়োগের ব্যবস্থা হবে।

আমিরুল ইসলাম জানান, ছাত্রীদের থাকার মতো উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি না হওয়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। তাই তিনি শিক্ষক–কর্মচারীদের থাকতে দিয়েছেন, যাতে রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক থাকে। এখন চিন্তা করা হচ্ছে, এটি অন্য কাজে ব্যবহার করা হবে। ছাত্রীনিবাসের জন্য আলাদা ভবন তৈরি করা হবে।