Thank you for trying Sticky AMP!!

সাংবাদিক সৈয়দ আশফাকের মায়ের প্রতিবাদ ও আহ্বান

দ্য ডেইলি স্টার–এর সাবেক নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও স্ত্রী তানিয়া খন্দকারের প্রতি ‘গণমাধ্যমের অন্যায্য অনুমান, মিথ্যা প্রচার ও তথ্য বিকৃতি’ এবং ১১৭ জন নাগরিকের বিবৃতিতে ভুল তথ্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আশফাকুলের মা আনোয়ারা মাহবুব। তিনি সঠিক উপায়ে তথ্য যাচাই না করে আশফাক-তানিয়া সম্পর্কে মিথ্যাচার না ছড়ানোর এবং সুবিচার বাধাগ্রস্ত হয় এমন পরিবেশ সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান।

মাগুরার প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাহাবুবুল হকের স্ত্রী আনোয়ারা মাহবুব (৮৫) আজ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শাহজাহান রোডে তাঁর ছেলে সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারের ফ্ল্যাট থেকে পড়ে মৃত্যুবরণ করে বাসার অনিয়মিত গৃহকর্মী প্রীতি উরাং। এই মৃত্যু একটি বিশাল ধাক্কা হিসেবে আসে আশফাক-তানিয়া দম্পতির জন্য, যারা দুর্ঘটনার সময় ঘুমিয়ে ছিল। আশফাক দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে এই দম্পতিকে অবহেলাজনিত মৃত্যুর দায়ে অভিযুক্ত করা হয়, যার তদন্ত এখনো চলছে। পুলিশ এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি। ৭১ দিন ধরে আশফাক ও তানিয়া কারাগারে আটক রয়েছে।

২ এপ্রিল প্রীতির মৃত্যু নিয়ে প্রকাশিত ১১৭ জন নাগরিকের বিবৃতিতে ‘পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা’, প্রীতির ওপর অত্যাচার, প্রায় ১৩ মিনিট ধরে গ্রিলে ঝুলে থাকা, বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ হারিয়ে যাওয়াসহ যেসব কথা বা অভিযোগ তোলা হয়েছিল; সেসবের কী প্রমাণ বা ভিত্তি আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আনোয়ারা মাহবুব। তিনি ১১৭ নাগরিকের বিবৃতিতে করা সমস্ত মিথ্যা দাবি ও ইঙ্গিত প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ‘তথাকথিত পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা সম্পর্কে বলতে চাই, দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমার ছেলে ও তার স্ত্রীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরদিন বেলা দুইটার দিকে আদালতে হাজির করার আগে প্রায় ২৮ ঘণ্টা মোহাম্মদপুর থানায় আটকে রেখে তাদের পুলিশ একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়। তাদের কারাগারের গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।’

আনোয়ারা মাহবুব বলেন, আশফাক ও তানিয়া তাদের গৃহকর্মীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছিল; এমন কথা কোনো উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, তদন্তকারী বা প্রীতি উরাংয়ের পরিবারের করা মামলায়ও বলা হয়নি। তিনি বলেন, আশফাক ও তানিয়া তাদের বাড়ি থেকে মুঠোফোনে সরাসরি সম্প্রচারের জন্য শুধু চায়নিজ একটি ক্যামেরা ব্যবহার করত, যেমনটি আজকাল অনেক পরিবার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান করে। যেহেতু এটি একটি লাইভ ক্যামেরা এবং কোনো ডিভাইস বা মেমোরি কার্ডে কোনো সংরক্ষিত ফুটেজ ছিল না, তাই এই ফুটেজ হারিয়ে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এ ছাড়া ২০২৩ সালের আগস্টে আশফাকের বাড়ি থেকে সাত বছর বয়সী গৃহকর্মী ফেরদৌসী পড়ে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার ঘটনায় ১১৭ জনের বিবৃতিতে কল্পিত তথ্য দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বিস্মিত যে এই ১১৭ জন নাগরিক, যাঁদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষা, সাংবাদিকতা, গবেষণা, ফৌজদারি তদন্ত ও আইনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সম্মানিত এবং দক্ষ। এ ধরনের সংবেদনশীল বিষয়ে তাঁরা কীভাবে এই ধরনের ভুল দাবি করলেন, বিশেষ করে যখন পুলিশের তদন্ত চলছে।’

এই ধরনের ধারাবাহিক অপপ্রচার কেবল সমাজকেই কলঙ্কিত করে না; বরং এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকেও প্রভাবিত করে উল্লেখ করে কৃষিবিদ আনোয়ারা মাহবুব বলেন, সৈয়দ আশফাকুল হকের ৩৩ বছরের সাংবাদিকতার কারণে পেশাগত প্রতিদ্বন্দ্বী, প্রতিপক্ষ ও শত্রু সৃষ্টি হয়েছে। এই স্বার্থান্বেষী মহল আশফাক-তানিয়া দম্পতিকে ‘মিডিয়া ট্রায়ালের’ শিকার বানাচ্ছে এবং ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিতকরণের সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা বা অপপ্রয়াস চালাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি পরিবারের পক্ষ থেকে আলোচ্য ঘটনার অবাধ, সুষ্ঠু, নির্মোহ ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদ্‌ঘাটন ও তার ভিত্তিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।