Thank you for trying Sticky AMP!!

উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে বায়ু দূষণ বাড়ছে

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটি আয়োজিত ‘বায়ু দূষণ: আমাদের করণীয় ও পদক্ষেপ’ শীর্ষক সেমিনারের আলোচকেরা। ছবি: প্রথম আলো

মানুষের জন্যই সরকার ধারাবাহিক উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে বায়ু দূষণ বাড়ছে। মানুষের প্রয়োজনেই উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হবে। কিন্তু মানুষ যদি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে শুয়ে থাকে কিংবা বেঁচে না থাকে, তাহলে উন্নয়নের কোনো সুফল নেই। তাই জীবন বাঁচিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এর জন্য টেকসই উন্নয়ন গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তাঁরা।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটি আয়োজিত ‘বায়ু দূষণ: আমাদের করণীয় ও পদক্ষেপ’ শীর্ষক সেমিনারে এমন আহ্বান জানান বক্তারা। তাঁরা বলেন, বিশ্বজুড়ে উন্নয়নের কারণে পরিবেশ ক্ষতির বিষয়টি অনেক পুরোনো। এ কারণেই টেকসই উন্নয়নের ধারণা এসেছে। এখানেও তা বাস্তবায়ন করতে হবে। ৬০ শতাংশ বায়ু দূষণের জন্য দায়ী ইট ভাটা। ইটের বিকল্প তৈরির পরও এসব ভাটা বন্ধ করা হচ্ছে না। ৭০ শতাংশ ইট সরকারি কাজে ব্যবহৃত হয় কিন্তু এসব প্রকল্পেই ইটের বিকল্প পণ্য ব্যবহার করা হচ্ছে না। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সদিচ্ছা থাকলেও মাঠ পর্যায়ে অনেক দুর্বলতা আছে। তাই অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয় না।

সেমিনারে সাবেক কৃষি মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের সমালোচনা করেন কিন্তু যেটা করেছি সেটাও বলেন, যেটা করতে হবে সেটাও বলেন আর অতীতে যা সর্বনাশ হয়েছে সেটাও বলেন।’ তিনি আরও বলেন, পানির সাশ্রয় করা না গেলে ধুলা উড়বেই। সরকার পানি সাশ্রয়ে নানা কাজ করে যাচ্ছে। দূষণ ঠেকাতে প্রয়োজনে প্রযুক্তির উৎর্কষতা কাজে লাগাতে হবে।

নগর বিশেষজ্ঞ নজরুল ইসলাম বলেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও সব কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই।তাই কথা বলতে হবে।

স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, উন্নয়নের ‘প্রসব-বেদনা’ বলে অনেকে অজুহাত দেখাচ্ছে, এটা অবহেলা ছাড়া আর কিছু নয়। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে জনদুর্ভোগ কমাতে বাড়তি বরাদ্দ রাখা হলেও কাজে তা দেখা যাচ্ছে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনতে হবে। আইন থাকার পরও ইট ভাটা বন্ধ না করে ‘নীরব হত্যাকাণ্ড’ ঘটানো হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেন, মানুষ না বাঁচলে উন্নয়ন দিয়ে কী হবে? তাই জীবন রক্ষা করেই উন্নয়ন করতে হবে।

বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটির চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রাণ গোপাল দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাফিজা খাতুন ও অধ্যাপক হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ডিবিসি টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আফতাব আলী। তাঁর প্রবন্ধে গণপরিবহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহার, বনায়নের পরিমাণ বৃদ্ধি, শক্তির অপচয় রোধ করা, পলিথিনের ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা, সৌরশক্তি ব্যবহার উৎসাহিত করা, পুনরায় ব্যবহারযোগ্য পণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত করা, ধূমপান নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়।