Thank you for trying Sticky AMP!!

এই বুঝি গেলাম নদীর পেটে!

ফাইল ছবি

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্রাবাস লাচ্ছি নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। ইতিমধ্যে ছাত্রাবাসের শৌচাগার ও সেপটিক ট্যাংকের পাশের মাটি ভেঙে নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনরোধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে আগামী বর্ষা মৌসুমে ছাত্রাবাসটি নিশ্চিহ্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৩ সালে কলেজটি স্থাপিত হয়। আশির দশকের শুরুতে ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হয়। একতলা ভবনে ১৪ কক্ষের ৪২টি আসন রয়েছে। বর্তমানে সেখানে ৬০ জন ছাত্র থাকেন। আবাসিক ভবনের পাশে রয়েছে চার কক্ষের শৌচাগার ও একটি রান্নাঘর। ১৯৮৬ সালে কলেজটি সরকারীকরণ করা হয়। তবে গত তিন দশকে সরকারি পর্যায়ে ছাত্রাবাসের কোনো উন্নয়ন হয়নি। দেড় দশক আগে নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। ইতিমধ্যে নদীটি ছাত্রাবাসের সীমানার ৪০-৪৫ ফুট ভেতরে চলে এসেছে। শৌচাগার ও সেপটিক ট্যাংকের পাশের মাটি ভেঙে নদীবক্ষে চলে গেছে। যেকোনো সময় তা নদীতে বিলীন হয়েছে যাবে। এর ৯-১০ ফুট দূরে রান্নাঘরের অবস্থান। আরও ১০-১২ দূরে আবাসিক ভবন।

স্নাতক (পাস) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবদুল আউয়াল বলেন, ‘টয়লেটে গেলে ভয় লাগে, কখন যেন ভেঙে নিচে পড়ে যাব। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পুরো ছাত্রাবাসটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’

কলেজ হোস্টেলের নৈশপ্রহরী আবুল হোসেন বলেন, ‘১৬-১৭ বছর থেকে আমি এখানে চাকরি করছি। একসময় নদীটি হোস্টেলের রান্নাঘর থেকে ৪০-৪৫ ফুট পূর্ব দিকে ছিল। এখন নদীটি রান্নাঘরের একদম কাছাকাছি এসে গেছে। উত্তর-দক্ষিণে নদীর স্রোতে ভাঙছে তীর। আর বৃষ্টির পানিতে ছাত্রাবাসের আঙিনার মাটি ধুয়েমুছে নদীতে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে দুই পাশের ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ছাত্রাবাস।’

কলেজের শিক্ষক বদরুল হুদা বলেন, ‘ভাঙন থেকে হোস্টেল রক্ষা করতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। নিজেরা টাকা তুলে ২০০৬ সালে নদীর ভাঙনের অংশে ইটের টুকরা ও খোয়া ফেলেছিলাম। বর্ষায় পানির তোড়ে সেই ইটের খোয়া ভেসে গিয়েছিল। ভাঙন থেকে কলেজের ছাত্রাবাস বাঁচাতে অনেক টাকা দরকার। কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষে এত টাকা জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। এটি রক্ষার জন্য সরকারি সাহায্যই একমাত্র ভরসা।’

কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক বলেন, লাচ্ছি নদীর ভাঙন থেকে ছাত্রাবাস রক্ষায় স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০১৩ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে আবেদন জানানো হয়েছিল। স্থানীয় প্রকৌশলীকেও একাধিকবার মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এযাবৎ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

অধ্যক্ষ শামসুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ছাত্রাবাসটি বাঁচাতে অনেক টাকার প্রকল্প দরকার। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন জানাব। অচিরেই গাইড বাঁধ নির্মাণ করা না হলে এটি নদীগর্ভে চলে যাবে।’

পাউবোর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী অরুণ কুমার সেন বলেন, বাঁধ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন। কলেজ কর্তৃপক্ষের আবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।