Thank you for trying Sticky AMP!!

ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে কোথায় আঘাত করবে 'আমফান'

ঘূর্ণিঝড়। ফাইল ছবি

লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপ। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপটি এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। তেমন কিছু না হলে এটি আরও শক্তিশালী হয়ে আজ শনিবার রাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘আমফান’। সাগর উত্তাল করে সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড় কোথায় আঘাত করবে? এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি আবহাওয়াবিদেরা। তবে তাঁদের ধারণা, এখন যেভাবে সাগর থেকে এগোচ্ছে, তাতে ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার রাতে বা বুধবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ঘেঁষে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ছোবল দিতে পারে।

নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় রূপ নিয়ে ‘আমফান’ বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। কারণ, লঘুচাপে পরিণত হওয়ার পর থেকে এটি বেশ কয়েক দিন সময় পেয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এরপর প্রায় দুই দিন সময় নিয়ে এটি নিম্নচাপে রূপ নেয়। এটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়ে পশ্চিম ও উত্তর–পশ্চিম দিকে এগিয়ে গেছে। আজ বিকেলে গভীর নিম্নচাপটি দক্ষিণ–পূর্ব ও দক্ষিণ–পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছিল। এ সময় এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ১ হাজার ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ–পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজার সৈকত এলাকাকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে এটি উত্তর দিকে যেতে পারে। এরপর ঘূর্ণিঝড়টি দিক পরিবর্তন করতে পারে। তখন এটি পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের ওপর আঘাত হানতে পারে। আর বেশি বাঁক নিলে পুরোপুরি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে ‘আমফান’ নামধারী ঘূর্ণিঝড়টি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, নিম্নচাপটির উৎপত্তি বেশ গভীর সাগরে হয়েছে। আজ রাতে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এটি বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।

এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে আগামীকাল রোববার। পরে এটি আরও শক্তিশালী হয়ে অতি ভয়ংকর রূপ নেবে। মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড়ের গতি পৌঁছে যেতে পারে প্রতি ঘণ্টায় ১৭০ থেকে ২০০ কিলোমিটার। স্থলভাগের দিকে যত এগোবে, তার গতি কিছুটা কমে যাবে। তবে উপকূলে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতি কত হতে পারে, সে ব্যাপারে এখন নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আবহাওয়াবিদেরা।

তবে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের আগে প্রকৃতি বেশ উত্তপ্ত হয়েছে উঠেছে। রাজশাহী, ফরিদপুর, পাবনা অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে। আজ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকায় ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।