Thank you for trying Sticky AMP!!

জারুলের অপূর্ব শোভা

জারুল ফুল, রমনা পার্কে। সাম্প্রতিক ছবি। লেখক

ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে। গাছের বাকল ও পাতার ধুলোমাখা বিবর্ণ রূপ হারিয়ে গেছে। প্রকৃতি অনেকটাই সতেজ। ঢাকার পার্কে ও সড়কে রোপিত জারুলগাছে বেগুনি বর্ণের ফুল ধরেছে। কয় দিন আগে ঢাকা শহরে জারুলের বেগুনি রং দেখে মনটা ভরে গিয়েছিল। কী অপূর্ব তার শোভা এবং আকর্ষণ! শৈশবে জারুল ফুল দেখিনি, তাই কোনো স্মৃতি নেই, শুধু মনে আছে এ গাছের কাঠ শক্ত এবং নৌকা তৈরিতে ব্যবহার করত গ্রামের মানুষ। তবে কৈশোরে বরিশালের সার্কিট হাউসের সামনে একটি জারুলগাছ দেখেছি, উপভোগ করেছি তার প্রস্ফুটন। সবুজ পাতার মাঝে প্রবল বেগুনি বর্ণের রূপে মাতোয়ারা হয়েছি। সেই জারুলগাছটি সম্ভবত টিকে আছে।

জারুল আমাদের অন্তরঙ্গ তরু। ঢাকা শহরে জারুলের উপস্থিতি অন্যান্য শহরের তুলনায় ভালো। তিন প্রজাতির জারুলগাছ আছে ঢাকা শহরে। রমনা পার্কে তিনটি প্রজাতিই আছে। এগুলো হলো জারুল, বিলেতি জারুল ও ছোট জারুল।

ছবির এই জারুলের আদি আবাস ভারতীয় উপমহাদেশের জলাভূমি অঞ্চল। পানিপছন্দ প্রজাতি। গাছ প্রায় ১০-২৫ মিটার হয়। পত্রমোচি গাছ। পাতা আয়তাকার।
গ্রীষ্মে কচি পাতার ভরা গাছের ডালের আগায় বেগুনি রঙের ফুলের বড় বড় থোকা বেশ নজরকাড়া। বেগুনি রং যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি তার পাপড়ির নমনীয়তা ও কমলতা হৃদয় ছুঁয়ে যায়। ফুল ৫-৭ সেন্টিমিটার চওড়া, অনেকগুলোয় সোনালি পুংকেশর থাকে। ফল ডিম্বাকার, শক্ত, বিদারি। বীজ ১ সেন্টিমিটার চওড়া, পাতলা, বাদামি। বীজে চাষ। জারুলের বৈজ্ঞানিক নাম Lagerstromia sepciosa। ইংরেজি নাম প্রাইড অব ইন্ডিয়া। বৈজ্ঞানিক নামের প্রথমাংশ এসেছে সুইডেনের অন্যতম তরু

অনুরাগী লেজারস্ট্রমের নামে। মাঝারি আকারের বৃক্ষটি শাখা-প্রশাখাময়। জলাভূমিতে যেমন এটি বেড়ে উঠতে পারে, তেমনি শুকনো এলাকাতেও এদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না।
জারুলের কাঠ লালচে রঙের, অত্যন্ত শক্ত ও মূল্যবান। ঘরের কড়ি-বরগা, লাঙল, নৌকা ও আসবাব তৈরিতে জারুল কাঠের কদর আছে। জ্বর, অনিদ্রা, কাশি ও অজীর্ণতায় জারুল উপকারী।