Thank you for trying Sticky AMP!!

সিলেটে হঠাৎ বন্যার কারণ ও করণীয় প্রসঙ্গে রাজধানীর ডিআরইউতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)

তিন কারণে সিলেটে বন্যার এই পরিস্থিতি: বাপা

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার শিকার দেশের উত্তর–পূর্বাঞ্চল। সিলেট ও সুনামগঞ্জের অধিকাংশ অঞ্চল পানিতে ডুবেছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এই বন্যার জন্য তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে। সেগুলো হলো জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তদেশীয় উদ্যোগের অভাব ও নিজেদের অব্যবস্থাপনা।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘আকস্মিক বন্যায় সিলেটে মানবিক বিপর্যয়: কারণ ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলেন বাপা এসব কথা জানায়।
বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্কের (বেন) বৈশ্বিক সমন্বয়ক ও বাপার সদস্য মো. খালেকুজ্জামান ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সিলেটে গত কয় দিনে যে বৃষ্টি হয়েছে, তা হওয়ার কথা নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এটা হচ্ছে। এটা বৈশ্বিক কারণ। এই বৃষ্টি আরও বাড়বে।

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে খালেকুজ্জামান বলেন, ভারতের আওতায় অনেক নদী আছে। মেঘনা অববাহিকায় ১৬টি আন্তদেশীয় নদী আছে। কিন্তু একটির জন্যও পানি–পলি ব্যবস্থাপনা যৌথভাবে করার চুক্তি নেই। ভারত তাদের বাধ ইচ্ছেমতো ব্যবহার করছে। যখন প্রয়োজন পানি ধরে রেখেছে। যখন প্রয়োজন খুলে দিয়েছে। যৌথ ব্যবস্থাপনায় গেলে পরিস্থিতি সামলানো যেত।

পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় বেষ্টনী পদ্ধতির ব্যবহার, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, নদী দখল ও ব্যবস্থাপনার অনিয়ম, যত্রতত্র বালু উত্তোলনকে বন্যার তৃতীয় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলা হয়, নদী, হাওর ভরাট করা হয়েছে। এগুলো খনন করতে হবে। এ ছাড়া ফসল রক্ষা বাঁধ কোনো কাজে আসে না। উন্নয়নের নামে হাওর ও নদীবিশিষ্ট অঞ্চলে যা হচ্ছে, তাতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান বিজ্ঞান ভিত্তিতে হতে হবে।

বেনের প্রতিষ্ঠাতা ও বাপার সহসভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, নদ–নদীর প্রতি যে দৃষ্টিভঙ্গি ও কৌশল সেটাই একটা সমস্যা। পানি প্রবাহকে বাঁধ দিয়ে নয়, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সিলেটের বন্যা থেকে শেকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশকে এতদিন ভুল ধারায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্লাবনভূমি পরিষ্কার রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শুরু হয়েছে। এই প্রভাব সামনে আরও বাড়বে। ঢাকার নদ নদীগুলোকে খাল বানানো হয়েছে। ঢাকাও সিলেটের মতো এমন পরিস্থিতিতে পরতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা হচ্ছে। এটা সত্য, কিন্তু এই কথাটি বলে দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। এই এড়িয়ে যাওয়াটা মারাত্মক ক্ষতিকর বলে জানান বাপার যুগ্ম সম্পাদক শারমীন মুরশিদ। তিনি আরও বলেন, সিলেটে পানির প্রবাহ কীভাবে আসছে এবং তা কীভাবে সাগরে যাচ্ছে, তা বাংলাদেশের হাতে রয়েছে। এখানে রাস্তা, অবকাঠামো নির্মাণ, বাঁধ তৈরি করে পানির প্রবাহকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা এগুলো নির্মাণের উপদেশ দিচ্ছেন, তাঁরা কিন্তু অন্যায় করছেন। শত শত মানুষকে বিপদে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালকের বক্তব্যে বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, হাওর ও নদীর তলদেশ ভারট হয়ে যাচ্ছে। ভরাট হওয়া এবং অব্যবস্থাপনার কারণে পানি ধারণ করতে পারছে না। এটা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তেই হচ্ছে। লাঠিটিলাতে সাফারি পার্ক নির্মাণের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই বন ধ্বংস করা হলে হাকালুকি হাওয়ার থাকবে না।