Thank you for trying Sticky AMP!!

দীঘিনালায় বন্দী ছয় হাজার পরিবার

বন্যা কবলিত এলাকা থেকে শিশুদের উদ্ধার করে আনছেন উদ্ধারকর্মীরা। বাবুপাড়া, দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, ১২ জুন। ছবি: পলাশ বড়ুয়া

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্রায় ছয় হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বলে জানা যায়। ইতিমধ্যে কয়েকশ পরিবারকে উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় উদ্ধার কর্মীরা বলছেন, প্রবল স্রোতে তাঁদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।

পানি জমে থাকায় বন্ধ রয়েছে দীঘিনালার সঙ্গে রাঙামাটির লংগদু, বাঘাইছড়ি ও সাজেকের সড়ক যোগাযোগ। অন্যদিকে বোয়ালখালী-হাচিনসনপুর এলাকায় মাইনি নদীর ওপর থাকা ঝুলন্ত সেতুটি পানির স্রোতে ভেসে গেছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বোয়ালখালী ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া, বাবুপাড়া, বোয়ালখালী পুরাতন বাজার, কবাখালী ইউনিয়নের হাচিনসনপুর, কলাবাগান, খালকুলপাড়া, উত্তর মিলনপুর, দক্ষিণ মিলনপুর, মেরুং ইউনিয়নের ছোট মেরুং বাজার, হাজাছড়া, সোবাহানপুর, মধ্য বোয়ালখালীসহ শতাধিক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে নৌকায় তুলছেন স্থানীয় উদ্ধার কর্মীরা। বাবুপাড়া, দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, ১২ জুন। ছবি: পলাশ বড়ুয়া


সকালে বাবুপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এ এলাকার শতাধিক বাড়ি ঘর তলিয়ে যাওয়ায় লোকজন ঘরের চালায় আশ্রয় নিয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে লোকজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসছে। স্থানীয় কান্তি চাকমা (৭০), মিনা চাকমা (৬৫), নুরুল আলম (৫০) ও মো. শফিক (৩৪) জানান, সোমবার গভীর রাতে ঘর ডুবে যাওয়ায় তাঁরা বাড়ির চালায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকালে উদ্ধারকর্মীরা এসে তাঁদের উদ্ধার করেছে।

এদিকে দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ির খালকুল পাড়া এলাকায় পানিবন্দীদের উদ্ধার করতে গিয়ে মাইনি নদীতে প্রবল স্রোতে উল্টে যায় একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা। এ সময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুসময় চাকমাসহ চারজন পানিতে ভেসে যান। তাৎক্ষণিক ভাইস চেয়ারম্যানসহ দুজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও অনুপম চাকমা (৩৫) ও চিকা চাকমা (৩৪) নামে দুই উদ্ধার কর্মী বেশ কিছুক্ষণ নিখোঁজ থাকেন। পরে ওই দুজনকেও জীবিত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। পাশাপাশি ডুবে যাওয়া নৌকাটিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি প্রথম আলোকে জানান।

বন্যায় শিশুদের পাশাপাশি ভয়াবহ সমস্যায় পড়েছেন বয়স্করা। তাঁদের উদ্ধারেও তৎপর থাকতে দেখা যায় স্বেচ্ছাসেবকদের। বাবুপাড়া, দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, ১২ জুন। ছবি: পলাশ বড়ুয়া

দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নব কমল চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, বন্যায় তাঁর এলাকায় প্রায় ছয় হাজার পরিবার গৃহহারা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শেখ শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন্যা কবলিত লোকজনের জন্য যা যা করণীয় তাই করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিয়েছেন। সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।’