Thank you for trying Sticky AMP!!

দুর্গাডাঙ্গার বাজারপাড়া যেন ধ্বংসস্তূপ

চিরিরবন্দর উপজেলার দুর্গাডাঙ্গার (বাজারপাড়া) সব কটি বাড়ি বন্যায় ধসে যায়। ছবিটি গত শনিবার তোলা l প্রথম আলো

জেসমি কিসকু (৭৪) ও মুগলি হাসদা (৭৬)। স্বামীহারা দুই নারী। তাঁরা দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের দুর্গাডাঙ্গা গ্রামের বাজারপাড়ার বাসিন্দা। তাঁদের মতো আরও ২০টি পরিবার বাস করে এই পাড়ায়। নিম্ন আয়ের প্রতিটি পরিবারের বাড়ি ছিল মাটির। এবারের বন্যায় এসব বাড়ি ধসে গেছে।

সরেজমিনে গত শনিবার দুপুরে ওই পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো পাড়া যেন ধ্বংসস্তূপ। ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে মাঝেমধ্যে দেখা মিলছে বাড়ির তৈজসপত্র-আসবাবপত্র। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কী যেন খুঁজছিলেন কৃষিশ্রমিক রবি হাসদা। এ সময় তিনি বলেন, এবার টানা বৃষ্টি ও বন্যায় পুরো পাড়াই ধসে যায়। দ্রুত বাড়িগুলো ধসে পড়ায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অনেকেই নিতে পারেননি।

ভ্যানচালক পলই হেম্ব্রম বলেন, ‘ভ্যানটা ছাড়া আর কিছুই নাই দাদা। এখন কেঙ্কেরে করমো বাড়ি। কত দিন আর বউ-ছোল নিয়ে মানসের অটে থাকমো।’

এ ছাড়া সরেজমিনে ভিয়াইল ইউনিয়ন ছাড়াও উপজেলার সাঁইতাড়া, আব্দুলপুর, পুনট্রি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতির দৃশ্য চোখে পড়ে। সাঁইতাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোকারম হোসেন বলেন, বন্যায় তাঁর ইউনিয়নের ছোট-বড় প্রায় ১৫টি সেতু ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের বন্যায় উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলায় ১০ হাজার পরিবার পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮ হাজার ৫০০ পরিবার। আবাদি জমি তলিয়ে গেছে ৭ হাজার ১২১ হেক্টর। বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০০ হেক্টর। পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ কিলোমিটার। কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬০০ কিলোমিটার।

ইউএনও মো. গোলাম রব্বানী বলেন, তিনি দুর্গাডাঙ্গা গ্রামসহ ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় গেছেন। সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি চলছে। সবাইকে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলছে।