Thank you for trying Sticky AMP!!

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট দুই বানরের পা কাটতে হতে পারে

আহত এক বানর। খাঁচায় ভরে নিয়ে আসা হয় গাজীপুরে সাফারি পার্কে। ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার সন্তোষপুর সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বেশ কয়েকটি বানর আহত হয়েছে। এদের মধ্যে তিনটিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বন্য প্রাণী চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দুটি বানরের পা কেটে ফেলতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

ময়মনসিংহ বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ ডিসেম্বর এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ–সংযোগ লাইনের উদ্বোধন হয়েছিল। এর পরপরই এমন দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে তারা জানতে পারে।

আজ শনিবার দুপুরে ভেটেরিনারি কর্মকর্তা হাতেম সাজ্জাদ জুলকারনাইন জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গত বুধবার থেকেই তাঁরা ময়মনসিংহের সন্তোষপুর বনাঞ্চলে অবস্থান করেন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অনেক বানর আহত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে গুরুতর তিনটিকে ট্রাঙ্কুলাইজেশন করে চিকিৎসার জন্য গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বন্য প্রাণী চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। দুটি বানরের সামনের পা খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। পাগুলো কেটে ফেলতে হতে পারে‌।

বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসীম মল্লিক প্রথম আলোকে জানান, বানানগুলো ঝলসে যাওয়ার খবরে তাঁরা সংশ্লিষ্ট বনে তিন দিন ধরে অবস্থান করে এগুলোর ওপর নজর রাখেন। এদের মধ্যে কয়েকটি বানর আহত হলেও ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারছিল। গুরুতর আহত সাফারি পার্কের বন্য প্রাণী চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে আসেন তাঁরা।

সাফারি পার্কে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, আমাদের বন্য প্রাণী চিকিৎসাকেন্দ্রে বানরগুলোকে সতর্কভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ হলে তাদের নিজেদের এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হবে।

বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ঝলসে গেছে পা। গাজীপুরে সাফারি পার্ক। ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা রুহুল আমিনও প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ–সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি বিভিন্ন নির্দেশনা থাকলেও পল্লী বিদ্যুৎ সেই নির্দেশনা মানেনি, বিধায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। বানরসহ অন্যান্য বন্য প্রাণীর নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। বন্য প্রাণীরা যেন এলাকা ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ না করে সে জন্য বন্য প্রাণীদের খাবার সংস্থানের জন্য পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুতের মুক্তাগাছা জোনাল অফিসের ডিজিএম অনিতা বর্মণ বলেন, বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বানর আহত হওয়ার খবরে ঘটনাস্থলে একটি পরিদর্শন দল গিয়ে ওপরের এসটি লাইন বন্ধ করে দেওয়াসহ নিচের দুই তারের দূরত্ব তিন ফুট করে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আর কোনো অসুবিধা হবে না বলে দাবি তাঁর।

তবে বন বিভাগ বলছে, এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। সন্তোষপুর বিট কর্মকর্তা আশরাফুল আলম খান বলেন, যে পর্যন্ত এখানে কভার তার ব্যবহার অথবা ভূগর্ভস্থ সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পরিবহনের ব্যবস্থা করা না হবে, সে পর্যন্ত বনের বানরেরা নিরাপদ—এ কথা বলা যাবে না।