Thank you for trying Sticky AMP!!

মন্ত্রণালয়ের অনুমতি, জানেন না প্রতিমন্ত্রী: আনু মুহাম্মদ

‘রামপাল, রূপপুর এবং জাতীয় কমিটির বিকল্প প্রস্তাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা। মুক্তিভবন, ঢাকা, ১৯ মে। ছবি: মো. আরিফুজ্জামান

তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সময় পরিবেশধংসী প্রকল্প বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে করার অনুমতি দিচ্ছে। অথচ এ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সেটা জানেন না। তাহলে প্রশ্ন হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় কে চালায়।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর পুরোনো পল্টনের মুক্তিভবনে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ঢাকা মহানগর শাখা আয়োজিত মতবিনিময় সভা ছিল। সেখানেই আনু মুহাম্মদ এ প্রশ্ন তোলেন।

কমিটির এই সদস্যসচিব বলেন, ‘বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে না জানিয়ে জ্বালানি সচিব সুন্দরবনের পাশে এলপিজি কেন্দ্রে ৩০০ অটোগ্যাস স্টেশনে গ্যাস ভরার অনুমতি দিয়ে দিলেন। প্রতিমন্ত্রী বলছেন, আমি জানি না, দেশে ছিলাম না। বরগুনাতে একটি সংরক্ষিত শ্বাসমূলীয় বন আছে। এটির ভেতরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। অথচ পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলছেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না নিয়ে সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে এটি তিনি জানেন না।’

‘রামপাল, রূপপুর এবং জাতীয় কমিটির বিকল্প প্রস্তাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আনু মুহাম্মদ বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রকল্পগুলো নেওয়া হয় কত টাকা কমিশন পকেটে ঢুকবে তা থেকে। ওই মন্ত্রণালয়ও চালায় দেশি বিদেশি কমিশন এজেন্টের লোকেরা। সে কারণে মন্ত্রী কিছু জানেন না।

তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অভিযোগ করেন, ‘সরকার বিদেশি টাকায় বিদ্যুতের একটি মহাপরিকল্পনা করেছে। সে অনুযায়ী ২০৪১ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউনিট প্রতি খরচ হবে ১৩ টাকা। আর জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে একটি বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাতে সরকার যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে সেটাই করা হবে কিন্তু খরচ হবে মাত্র ৫ টাকা। এক ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে এক টাকা সাশ্রয় করা গেলে জাতীয় অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়ে গড়ে ৫০ টাকা। আমাদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী ৮ টাকা কমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেলে লাখো কোটি টাকা জাতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। এই প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রীকেও দেওয়া হয়েছে। সরকার সেদিকে না গিয়ে বেশি দামে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করছে। এটা করা হচ্ছে দেশীয় কমিশন এজেন্টদের লুটপাট করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।’

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, এক সময় দেশের মন্ত্রীরা বলতেন গ্যাসের ওপর বাংলাদেশ ভাসছে। এত গ্যাস মাটির নিচে রেখে লাভ কী ভারতে রপ্তানি করে দিই। এখন আবার বলছে গ্যাস নেই। বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে গ্যাস সংকট মোকাবিলা করতে হবে। অথচ সরকার দেশের সাগরের নিচে গ্যাস উত্তোলনে কোন চেষ্টা করেনি। সাগর থেকে জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স দিয়ে গ্যাস উত্তোলন না করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।

মতবিনিময় সভায় পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করে প্রকৌশলী মওদুদ রহমান সরকারের গৃহীত বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকল্পনার অসংগতিগুলো দেখান। এ ছাড়া জাতীয় কমিটির বিকল্প বিদ্যুৎ প্রস্তাবনা সরকার মেনে নিলে সাশ্রয়ীমূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলেও উপস্থাপনায় বলা হয়।

মতবিনিময়র সভায় আরও বক্তব্য দেন ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের বজলুর রশীদ ফিরোজ, জাতীয় কমিটির মহানগর শাখার জুলফিকার আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা প্রমুখ।