Thank you for trying Sticky AMP!!

শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’

ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ দ্রুত শক্তি বাড়াচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার গতি নিয়ে ভারতের অন্ধ্র ও ওডিশা উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার। তবে ঝড়টি যেকোনো সময় গতি বদলে বাংলাদেশ বা মিয়ানমারের দিকেও মুখ করে এগোতে পারে। যে কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে নিয়মিতভাবে এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের প্রধান তিন বন্দর চট্টগ্রাম, পায়রা ও মোংলা এবং কক্সবাজার উপকূলকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে। বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে সাবধানে ও উপকূলের কাছাকাছি স্থানে চলাচল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে দেশের বেশির ভাগ এলাকা থেকে মেঘ আর বৃষ্টি বঙ্গোপসাগরের দিকে যাচ্ছে। যে কারণে আকাশ মেঘমুক্ত হয়ে দিনের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিক্ষিপ্তভাবে রাজধানীসহ দেশের দু-একটি জায়গায় হালকা বৃষ্টি হলেও তা অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী ছিল। তবে রোদ বেড়ে যাওয়ায় গরমের তীব্রতা বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের কাছাকাছি আসার আগপর্যন্ত আগামী কয়েক দিন গরমের তীব্রতা বাড়তে পারে।

এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছানাউল হক মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি দ্রুত শক্তি অর্জন করছে। তবে এর গতিপথ এখন পর্যন্ত ভারতের অন্ধ্র ও ওডিশা উপকূলের দিকে আছে। তবে এটি গতি বদলে যেকোনো সময় বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকেও আসতে পারে। যে কারণে আমরা নিবিড়ভাবে ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছি।’

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ উঠেছে ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়াসহ ঘণ্টায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হওয়ার পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো।

কানাডা সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামালের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরের মধ্যে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা সবচেয়ে কম ভারতের ওডিশা উপকূলে। সমগ্র বঙ্গোপসাগরের মধ্যে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে। চট্টগ্রাম ও মিয়ানমার উপকূলে পানির তাপমাত্রা ভারতের ওডিশা উপকূলের চেয়ে বেশি।

ঘূর্ণিঝড় অশনি যদি প্রকৃতপক্ষে ভারতের ওডিশা উপকূলে পৌঁছায়, তবে সে ক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি হঠাৎ করে উল্লেখযোগ্যহারে কমে যাবে। ঘূর্ণিঝড়টি তখন ঘূর্ণিঝড় হিসেবে না থেকে গভীর নিম্নচাপ কিংবা লঘুচাপে পরিণত হবে। তবে ঘূর্ণিঝড়টির দুর্বল হয়ে যাওয়া নির্ভর করছে এটি ভারতের ওডিশা উপকূলের ঠিক কত কাছাকাছি চলে যাবে তার ওপর। কারণ, উপকূলের কাছাকাছি পানির তাপমাত্রা অনেক কম। ফলে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের যত কাছাকাছি চলে যাবে, তা তত বেশি শক্তি হারাবে ও তত বেশি দুর্বল হয়ে পড়বে। বিপরীতক্রমে ঘূর্ণিঝড়টি ওডিশা উপকূল থেকে যত বেশি দূরে অবস্থান করবে, ঠিক তত বেশি শক্তি ধরে রাখতে পারবে।