Thank you for trying Sticky AMP!!

বালুমহালের নামে নদীগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে: রিজওয়ানা হাসান

বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে আজ ‘বালু-পাথর উত্তোলন ও দখল-দূষণে নদ-নদীর বিদ্যমান জীর্ণদশা এবং পরিবেশ সংকট’ শীর্ষক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অভিযোগ করে বলেন, কোনো প্রকার জরিপ ছাড়াই দেশের বিভিন্ন নদ–নদীকে বালুমহাল ঘোষণা করা হচ্ছে। গত ২০ বছরে নদ–নদী ও নদ–নদীসংলগ্ন অঞ্চল থেকে ১৩০-১৪০ ফুট গর্ত করে বালু-পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে কৃষিজমি, বাড়িঘড় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আজ সোমবার এক গোলটেবিল বৈঠকে সৈয়দা রিজওয়ানা এসব কথা বলেন। বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে ‘বালু-পাথর উত্তোলন ও দখল-দূষণে নদ-নদীর বিদ্যমান জীর্ণদশা এবং পরিবেশ সংকট’ শীর্ষক এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজন করে বেসরকারি সংস্থা এএলআরডি, বেলা ও পানি অধিকার ফোরাম।

সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ৬ বছরে সিলেটের পাথরমহালগুলো থেকে সরকার রাজস্ব অর্জন করেছে ৩৮ কোটি ৫০ লাখ। বছরে মাত্র সাড়ে ছয় কোটি টাকার জন্য জাফলং-বিছনাকান্দির নদীগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে।
নদীকে অস্বীকার করে দেশে উন্নয়ন সম্ভব নয়, উল্লেখ করেন সৈয়দা রিজওয়ানা। তিনি বলেন, বালুমহাল আইনের ৫ নম্বর বিধি অনুযায়ী কেউ একক সিদ্ধান্তে বালুমহাল ঘোষণা করতে পারেন না। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি জেলা কমিটি পরিবেশ ও সার্বিক ঝুঁকির বিষয়গুলো তদারক করার কথা। কিন্তু কমিটি নিজেদের দায়িত্ব পালন করে না। উল্টো অভিযোগ দিলে দায়সারা প্রতিবেদন দাখিল করে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা। তিনি বলেন, দেশটা এখন ‘ক্রাইমওয়ার্ল্ড’ হয়ে গেছে। নদী–নালা, খাল–বিল দখল হয়ে যাচ্ছে। নদীকে বাঁচানো না গেলে প্রকৃতিকে রক্ষা করা যাবে না।

নদী দিবস উপলক্ষে বৈঠকে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

রিভারাইন পিপল–এর পরিচালক এবং রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ সরকারকে নদী ও পরিবেশকর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নদী ও পরিবেশকর্মীরা মাঠে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যুঝুঁকিসহ নানা প্রতিকূলতায় পড়েন। প্রশাসনও তাঁদের সহযোগিতা করতে চায় না।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জেলা–উপজেলায় নদী নিয়ে কাজ করা সংগঠন, এনজিও প্রতিনিধি ও সংবাদকর্মীরা বক্তব্য দেন।

নেত্রকোনার হাজংমাতা রাশিমনি কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মতিলাল হাজং বলেন, বালুমহাল ইজারা দেওয়ার নামে সোমেশ্বরী নদী হত্যা করা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ খননযন্ত্র দিয়ে বালু তোলা হয়। এসব বালু পরিবহনে কোনো নিয়মনীতি না মানায় দুর্গাপুরে পরিবেশবিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন বক্তব্য দেন।