Thank you for trying Sticky AMP!!

লাঠিটিলা বনেই হবে সাফারি পার্ক

সাফারি পার্কের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য এই স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনের লালছড়া এলাকায়

পরিবেশবাদীদের আপত্তি উপেক্ষা করে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা বনেই সাফারি পার্ক স্থাপন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৫ হাজার ৬৩১ একর এলাকার ওপর সাফারি পার্কটি নির্মাণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, মৌলভীবাজার (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটির জন্য ৩৬৪ কোটি ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু হবে।

প্রকল্পটি অনুমোদনের পর পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এক ভিডিও বার্তায় বলেন, এই সাফারি পার্ক নির্মাণের ফলে বন্য প্রাণী সংরক্ষণে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এখানে দেশ–বিদেশের পর্যটক আসবে, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে; সর্বোপরি এলাকার মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। তিনি দাবি করেন, ওই এলাকায় বসবাসরত ব্যক্তিদের সুরক্ষা দিয়েই সাফারি পার্কটি নির্মাণ করা হবে।

এদিকে প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার আগে পরিকল্পনা কমিশন থেকে শর্ত হিসেবে প্রকল্পটির পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) করে পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের কাজে পাহাড় না কাটতে বলা হয়। যদিও দেশের বিদ্যমান পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে এ ধরনের বড় অবকাঠামো নির্মাণের আগে ইআইএ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। জরুরি রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন ছাড়া পাহাড় কাটারও নিয়ম নেই।
এর আগে কক্সবাজারের চকরিয়ায় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক–১ এবং গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক–২ নির্মাণ করা হয়। ওই দুটি প্রকল্প নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।

বিশেষ করে গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়া এবং দুটি সাফারি পার্কে বন্য প্রাণী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এই দুটি সাফারি পার্কে এখনো বন্য প্রাণীদের সুরক্ষা এবং আর্ন্তজাতিক মান অর্জন না করা নিয়ে পরিবেশবাদীদের অভিযোগ আছে। এমন পরিস্থিতিতে লাঠিটিলার মতো বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যপূর্ণ বনে আরেকটি সাফারি পার্ক নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে পরিবেশবাদীরা প্রশ্ন তুলেছেন।

Also Read: বনমন্ত্রীর এলাকায় সংরক্ষিত বন কেটে হবে সাফারি পার্ক, ‘আত্মঘাতী’ প্রকল্প বলছেন পরিবেশবিদেরা

এ বিষয়ে পরিবেশ আন্দোলন ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, সরকার দেশে-বিদেশে পরিবেশ ও বনভূমি রক্ষায় অনেক কথা বলে। কিন্তু বাস্তবে তারা দেশের অন্যতম জীববৈচিত্র্যপূর্ণ একটি বনের মধ্যে সাফারি পার্কের মতো বিশাল অবকাঠামো গড়ে তুলছে, যা দেশের বন সুরক্ষার বিদ্যমান আইন এবং আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষিত অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাঁর মতে, সরকারের উচিত ওই প্রকল্প থেকে সরে আসা।