Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢামেক হাসপাতালেও মারধরের শিকার ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীরা

ছাত্র অধিকার পরিষদের ডাকা বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের স্মরণসভা করতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসা নিতে গিয়েও রেহাই পাননি তাঁরা। সেখানে পুলিশের সামনেই তাঁরা ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে স্মরণসভার আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। আবরার হত্যার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ স্মরণসভায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হামলায় ছাত্র অধিকারের অন্তত ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের এক নেতাও গুরুতর আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, হামলার পর ছাত্র অধিকারের আহত নেতা-কর্মীদের চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে মেডিকেলের জরুরি বিভাগে যান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের একদল নেতা। সেখানে ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের মারধর ও হেনস্তা করেন তাঁরা। পরে পুলিশ ছাত্র অধিকারের কয়েক নেতা-কর্মীকে গাড়িতে তোলে। এ সময় পুলিশের সামনেই ছাত্রলীগ তাঁদের মারধর করে। তবে পুলিশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের থামাতে তেমন কিছু করেনি।

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলে আমাদের আহত নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগ আমাদের আটকে রাখলে শাহবাগ থানা-পুলিশ এসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আখতার হোসেনসহ প্রায় ১৫ জনকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায়।’

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, ১৫ থেকে ১৬ জনকে মেডিকেল থেকে গাড়িতে করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ সাড়া দেননি। পরে রাত আটটার দিকে শাহবাগ থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) প্রথম আলোকে জানান, ছাত্র অধিকারের ২০ নেতা-কর্মী থানায় আটক আছেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Also Read: ঢাবিতে আবরার ফাহাদ স্মরণসভায় ছাত্র অধিকারের ওপর ছাত্রলীগের হামলা

এদিকে বিকেলের হামলার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্র অধিকার পরিষদ ছাত্রশিবিরের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই তাদের (ছাত্র অধিকার) প্রতিহত করেছে। এর সঙ্গে সাংগঠনিকভাবে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ নেই। যাঁরা গেছেন, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবেই তাঁদের প্রতিহত করতে গেছেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, তারাও (ছাত্র অধিকার) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়েছে, আঘাত করেছে।’

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। তা আমলে নিয়ে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। তাঁরা সবাই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে তিনজন পলাতক।

Also Read: ২০ জনের ফাঁসি, ৫ জনের যাবজ্জীবন