Thank you for trying Sticky AMP!!

সাদির প্রয়াণ: আমার গ্লানি

সাদি মহম্মদ, রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ও শিক্ষক। ১৩ মার্চ তিনি আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে সহৃদয় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংগীতশিল্পী ও ছায়ানটের সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন।

সাদি মহম্মদ

খবরের কাগজে মৃত্যুর খবরটা দেখে ভয়ানক চমকে উঠেছিলাম। সাদি মহম্মদের চলে যাওয়ায় হঠাৎ মনে হলো, এর জন্য আমার কি কোনো দায় নেই? কই, কখনো তো ভাবিনি ওর কথা এমন করে!

আমার নিজেকে অপরাধী মনে হয়েছে, আমি ওকে কখনো সহানুভূতি দেখাতে পারিনি। অথচ সেই কৈশোর থেকেই সাদি কী ভয়াবহ যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছিল। নিজের চোখে সে দেখেছে, পাকিস্তানি খুনিদের হাতে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবার অসহায় মৃত্যু!

Also Read: সংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ মারা গেছেন

সন্‌জীদা খাতুন

এমন কথা শোনা যেত, অনেকে বলত, সাদি নাকি মানুষ হিসেবে ছিল ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের। আমি কাউকে কাউকে বলেছি, তুমি তো আর কারও কাছে শুনে বলছ। এমন কথা বলাবলি করাটা ঠিক নয়।

আমি তো বয়সে অনেক বড়, কিন্তু তার কাছাকাছি বয়সের অনেক গানের বন্ধু ছিল, ঘনিষ্ঠ শিল্পীবন্ধু ছিল, এক ঝাঁক শিষ্য ছিল। কারও কাছেই কি সাদি কোনো সহানুভূতি পেয়েছে? সে কী রকম নিজের সঙ্গেই যুদ্ধ করে চলেছে; কী যে হতভাগ্য মানুষ!

Also Read: বাবা ও মায়ের কবরে শায়িত সাদি মহম্মদ

ওর সেই দুঃসহ অবস্থা আমাকে কেন স্পর্শ করল না আগে! ভেবে ভেবে অপরাধবোধ হচ্ছে। ওর জন্য আমার কি কিছু করার ছিল না? আরও বেশি করে মনে হয়, আমি না-হয় ওর চেয়ে বয়সে অনেক বড়, অনেক দূরের; ওর কাছাকাছি তো অনেক শিল্পী ছিল, তাদের সঙ্গে ওর ভালো যোগাযোগ ছিল, তারা যে ওর জন্য অনুভব করেছে এমন পরিচয়ও পাইনি। আমি নিজে যেমন অনুভব করিনি, অনুভব করেনি অন্যরাও। আমরা সবাই অপরাধী।

Also Read: সাদি মহম্মদের মৃত্যু নিয়ে যা বলছেন চিকিৎসক

সাদি যেন আমাদের পদাঘাত করে চলে গেল। আমরা দোষী হয়েই রইলাম। এখন ভেবে যতই দুঃখ পাই, কিছু করবার তো আর নেই। তার প্রতি সহানুভূতিতে এখন আমি জর্জরিত হচ্ছি।