Thank you for trying Sticky AMP!!

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাসের রায় বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

হাইকোর্ট ভবন

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় ৯ বছর আগে ফাতেমা আক্তার ইতি (১০) নামের একটি শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে ওই মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা সংশোধন করে তাঁদের যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার এ রায় দেন। দুই আসামি হলেন মেহেদী হাসান স্বপন ও সুমন জমাদ্দার।

এর আগে ওই মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি পিরোজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক রায় দেন। রায়ে দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর নিয়ম অনুসারে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) হাইকোর্টে আসে। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন। শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৩০ জুন হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ওই দুজনকে খালাস দেওয়া হয়। খালাসের এই রায়ের বিরুদ্ধে গত বছর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে, যার ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হলো।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন ও এম সাইফুল আলম। অন্যদিকে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা ও মোহাম্মদ শিশির মনির।

পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে রায় স্থগিত হয়। ফলে ২০১৬ সাল থেকে সাত বছর ধরে আসামিরা কনডেম সেলে আছেন। আপিল বিভাগ তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এখন তাঁরা কনডেম সেলে থাকবেন না।’

সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফাতেমা তার নানাবাড়িতে থেকে স্থানীয় হাতেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য বিদ্যালয়ের মাঠে যায় শিশুটি। পরে ঘরে না ফেরায় তাকে খুঁজতে শুরু করেন স্বজনেরা। পরদিন বাড়ির পাশের একটি বাগানে তার মরদেহ পাওয়া যায়। মঠবাড়িয়া থানা–পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। ময়নাতদন্তে দেখা যায়, শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ২০১৪ সালের ৬ অক্টোবর মঠবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্তে পুলিশ ফাতেমার মামাতো ভাই মেহেদী হাসান স্বপনের সম্পৃক্ততা পায়। পরে মেহেদী ও তার সহযোগী সুমনকে গ্রেপ্তার করে। সুমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভাষ্য, মেহেদী ও সে মেয়েটিকে প্রলোভন দেখিয়ে বাগানে নিয়ে প্রথমে ধর্ষণ করে। যাতে বিষয়টি জানাজানি না হয়, সে জন্য পরে তারা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে শিশুটিকে হত্যা করে।