Thank you for trying Sticky AMP!!

দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ইনস্টিটিউটের শিল্পী রশিদ চৌধুরীর আর্ট গ্যালারির সামনে

শ্রেণিকক্ষ সংস্কার, পর্যাপ্ত শৌচাগার স্থাপন, পানি সরবরাহ নিশ্চিতসহ ১১ দাবিতে ক্লাস বর্জন করে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

১১ দাবিতে শিক্ষার্থীরা গতকাল বুধবার দুপুরে প্রথম ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবারও তাঁরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করছেন।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আজ ইনস্টিটিউটের শিল্পী রশিদ চৌধুরী আর্ট গ্যালারির সামনে অবস্থান নেন। তাঁরা নানা ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের হাতে রয়েছে প্ল্যাকার্ড। প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে—‘ঝুঁকিপূর্ণ ক্লাসরুম ও ভবন চাই না’, ‘চারুকলার ডাইনিং কই’, ‘চিকিৎসার ব্যবস্থা চাই’, ‘মেয়েদের আবাসন চাই’, ‘টয়লেট কই’ ইত্যাদি স্লোগান।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—শ্রেণিকক্ষ সংস্কার, পর্যাপ্ত আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ডাইনিং চালু করা, ব্যক্তির ফিগার আঁকার জন্য মডেল নিয়োগ দেওয়া, গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগারিক নিয়োগ ও পর্যাপ্ত বইয়ের রাখা, শিক্ষার্থীদের আঁকার সরঞ্জামের জন্য স্টেশনারি দোকানের ব্যবস্থা করা, পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা করা, শিক্ষার্থীদের জন্য বাস চালু করা, খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা, বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা এবং শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত লাইট, ফ্যান, ইজেল, লকার ও বেসিনের ব্যবস্থা করা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, চবিতে চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালে। ২০১০ সালে নগরের সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে এক হয়ে গঠিত হয় চারুকলা ইনস্টিটিউট। ইনস্টিটিউটের অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে, নগরের মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে। বর্তমানে ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫৩ জন। তাঁদের মধ্যে ছাত্রী ১৭৯ জন, ছাত্র ১৭৪ জন।

ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী আলম প্রথম আলোকে বলেন, ইনস্টিটিউট হওয়া সত্ত্বেও চারুকলার শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পান না। ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের অর্ধেকের বেশি ছাত্রী। কিন্তু তাঁদের জন্য আবাসনব্যবস্থা নেই। ১৩ আসনের একটি হোস্টেল রয়েছে। সেখানে কোনোরকমে ২৫ জন ছাত্র থাকেন।

মেহেদী আলম বলেন, চারুকলার শিক্ষার্থীদের যেসব সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন, তা তাঁরা নামমাত্রেও পান না। শ্রেণিকক্ষের কোথাও পানির ব্যবস্থা নেই। আঁকাআঁকির কাজ করার পর শিক্ষার্থীদের হাত ধোঁয়ার প্রয়োজন হলে তাঁদের চারতলা থেকে নিচতলায় নামতে হয়। পুরো ভবনে মেয়েদের জন্য একটি মাত্র শৌচাগার রয়েছে। এ কারণে তাঁদের লাইনে দাঁড়িয়ে শৌচাগার ব্যবহার করতে হয়।

ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী পার্থ রয় প্রথম আলোকে বলেন, গ্রন্থাগারে পর্যাপ্ত বই নেই। আঁকার সরঞ্জাম নেই। শ্রেণিকক্ষে বসতে শিক্ষার্থীরা ভয় পান। কারণ, দেয়ালের প্লাস্টার প্রায়ই ভেঙে পড়ে। এসব নিয়ে কয়েকবার পরিচালককে জানানো হয়। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। গতকাল বেলা ১১টার দিকে পেইন্টিং কক্ষে প্লাস্টার ভেঙে পড়ে। তারপরই শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, দাবির বিষয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসবেন। তাঁদের দাবির বিষয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবি ইতিমধ্যে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটির মাধ্যমে অনুমোদিত হয়েছে। শিগগির এসব বাস্তবায়ন করা হবে।