Thank you for trying Sticky AMP!!

বইমেলায় ‘আদর্শ’কে স্টল না দেওয়ার যে ব্যাখ্যা দিল বাংলা একাডেমি

বাংলা একাডেমি

অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশনা সংস্থা ‘আদর্শ’কে স্টল বরাদ্দ না দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে বাংলা একাডেমি। সংস্থাটি বলছে, বইমেলার নীতিমালা অনুসরণ না করে ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে’ নামের একটি বই প্রদর্শন ও বিক্রির জন্য বইমেলার স্টলে রাখতে চাওয়ায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে না।

আজ রোববার বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আদর্শকে বইমেলায় স্টল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না—এই মর্মে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি বাংলা একাডেমির দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। বাংলা একাডেমি এখন পর্যন্ত কোনো প্রকাশনা সংস্থাকে স্টল বরাদ্দ দেয়নি। ২২ জানুয়ারি (আজ রোববার) আবেদনকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে লটারির মাধ্যমে স্টল বরাদ্দ করা হবে।

Also Read: বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনাকে স্টল না দেওয়ায় বিশিষ্টজনদের নিন্দা ও উদ্বেগ

সংবাদ দৃষ্টিগোচর হলে অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটি ‘আদর্শ’ প্রকাশনা প্রকাশিত ফাহাম আব্দুস সালামের লেখা ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে’ বইটি সংগ্রহ করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। বাংলা একাডেমি বলেছে, বইটি বইমেলার নীতিমালা ও নিয়মাবলির ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের উপ-অনুচ্ছেদ ১৪.১৪ ও ১৪.১৫-এ বর্ণিত শর্তাবলি পূরণে সক্ষম হয়নি। তাই আদর্শের প্রকাশক মাহাবুব রহমানের বক্তব্য শুনতে বাংলা একাডেমির পরিচালক ও অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব মুঠোফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কমিটির পক্ষ থেকে বইটি প্রদর্শন ও বিক্রির জন্য বইমেলার স্টলে না রাখার বিষয়ে প্রকাশক মাহাবুবের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। মাহাবুব বইটি স্টলে প্রদর্শন ও বিক্রির জন্য রাখবেন বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, যা বইমেলার নীতিমালায় বর্ণিত শর্তাবলির সম্পূর্ণ বিপরীত।

এ অবস্থায় গতকাল শনিবার বিকেলে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রকাশনা সংস্থা আদর্শ স্টল বরাদ্দসংক্রান্ত শর্তাবলি মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় স্টল বরাদ্দের লটারিতে অংশগ্রহণে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। এ বিবেচনায় আদর্শের অনুকূলে স্টল বরাদ্দ প্রদান করা হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বাংলা একাডেমির চোখে ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে’ বইয়ের ‘বিতর্কিত’ অংশটুকুও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বইটির ১৫ নম্বর পৃষ্ঠায় বাঙালি জাতিসত্তা; ১৬ নম্বর পৃষ্ঠায় বিচার বিভাগ, বিচারপতি, বাংলাদেশের সংবিধান, সংসদ সদস্য; ২০ নম্বর পৃষ্ঠায় মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ এবং ৭১ নম্বর পৃষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে অশ্লীল, রুচিগর্হিত, কটাক্ষমূলক বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে। যা সংবিধানের ৩৯ (২) অনুচ্ছেদে বর্ণিত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, যুক্তিসংগত বিধিনিষেধ সাপেক্ষে বাক্‌ ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের পরিপন্থী। অনুরূপভাবে কমিটি মনে করে, বইটি বইমেলার নীতিমালা ও নিয়মাবলির পরিপন্থী।

বইটি নিয়ে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন জানিয়ে আদর্শ প্রকাশনীর প্রকাশক মাহবুব রহমান বলেছেন, ফোনে তাঁর সঙ্গে যে কথোপকথন হয়েছে, সেখানকার একটি বিষয় চেপে গেছে বাংলা একাডেমি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিটির সদস্যসচিব আমাকে বলেছেন, “বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে” বইটির জন্য আপনি দুঃখপ্রকাশ করে আমাদের চিঠি লিখবেন। দ্বিতীয় আরেকটি বিষয় বলে যে এ বইটা আপনি স্টলে রাখতে পারবেন না। আমি তাঁদের কথায় অসম্মতি জানিয়েছি।’

স্টল বরাদ্দের লটারি থেকে আদর্শকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘অন্যায়’ আখ্যায়িত করেছেন প্রকাশক মাহবুব। তিনি বলেন, ‘কোনো একটি বইয়ের জন্য তাঁরা পুরো একটি প্রকাশনাকে বাতিল করেছে। যে প্রকাশনা থেকে ছয় শতাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আসলে ছয় শতাধিক বই ও তিন শতাধিক লেখককে নিষিদ্ধ করা হয়।’
বইমেলা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে ‘আদর্শ’কে স্টল বরাদ্দ দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন মাহবুব রহমান।

Also Read: বইমেলায় আদর্শের স্টল না পাওয়া যে বার্তা দেয়