Thank you for trying Sticky AMP!!

এবার চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেন চায় বাংলাদেশ ব্যাংক

চট্টগ্রামের সাগরিকা পশুর হাটে কোরবানির জন্য পশু কিনতে ক্রেতাদের ভিড়

পবিত্র ঈদুল আজহার সময় কোরবানির পশুর হাটে নগদ অর্থের চাহিদা বেড়ে যায়। নগদ টাকা নিয়ে পশু কিনতে এসে কখনো কখনো ছিনতাই ও প্রতারণার শিকার হন সাধারণ মানুষ। আবার বিক্রেতারাও জাল নোটের কারণে পড়েন বিপাকে। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পশুর হাটগুলোতে ডিজিটাল লেনদেন চালু করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। সহজ ও ঝুঁকিমুক্ত লেনদেনের জন্য কিছু হাটে এ ব্যবস্থা চালুর জন্য সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীকে এ চিঠি দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদারের সই করা চিঠিতে বলা হয়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাটে নগদ অর্থের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এতে ব্যাংকগুলোর পক্ষে নগদ অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করা দুরূহ হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ ও পশু বিক্রেতারা জাল নোট, ছিনতাই ও বিভিন্ন প্রতারণার শিকার হন। এ অবস্থায় ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ কার্যক্রমের আওতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বড় পশুর হাটগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক সিটি করপোরেশনের মেয়রকে চিঠি দিয়েছে। মেয়রের দপ্তর থেকে নির্দেশনা পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

ওই চিঠিতে বলা হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল অনুসারে জনগণের সব লেনদেনের প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজড করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ‘ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমের’ আওতায় আনার জন্য চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ কার্যক্রম নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কার্যক্রমের আওতায় চলতি বছরের কোরবানির পশুর হাটে বেচাকেনার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাটের লেনদেন বাংলা কুইক রেসপন্স (কিউআর) কোডসহ অন্যান্য স্মার্ট মাধ্যমে ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে কেনাবেচার পাশাপাশি হাসিলের অর্থও ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন করার পরিকল্পনা আছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এবং হাসিলের কাউন্টারগুলোর পাশে ডিজিটাল পেমেন্ট বুথ স্থাপনের জন্য স্থান বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয় চসিক মেয়রকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সিটি করপোরেশনের মেয়রকে এ চিঠি দিয়েছে। মেয়রের দপ্তর থেকে নির্দেশনা পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে গত বছর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পরীক্ষামূলকভাবে ছয়টি হাটে ক্যাশলেস লেনদেনের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। হাটগুলো ছিল মোহাম্মদপুর (বছিলা), আফতাবনগর, ভাটারা, কাওলা, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর ও গাবতলী পশুর হাট। এ কার্যক্রমের আওতায় পশুর হাটে ডিজিটাল পেমেন্ট বুথ বসানো হয়েছিল।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ছয়টি হাটে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এটিএম মেশিন থেকে টাকা তুলে বিক্রেতাকে পশুর মূল্য পরিশোধের সুযোগ রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া বিকাশ ও ইসলামী ব্যাংকের এম ক্যাশের মাধ্যমেও মূল্য পরিশোধ করেছিলেন ক্রেতারা। হাটগুলোতে ডিজিটাল লেনদেন করলে বাড়তি খরচের প্রয়োজন হয়নি। যেমন কার্ড ব্যবহারে কোনো চার্জ নেওয়া হয়নি। আবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা তুলতে ক্যাশ আউট খরচ দিতে হয়নি।

চট্টগ্রাম নগরে তিনটি স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে। এগুলো হচ্ছে সাগরিকা, বিবিরহাট ও পোস্তারপাড় হাট। এর বাইরে ঈদুল আজহার সময় নগরের বিভিন্ন এলাকায় ১০ দিনের জন্য অস্থায়ী পশুর হাট বসায় সিটি করপোরেশন। এগুলো পরিচালনার জন্য দরপত্রের মাধ্যমে ইজারাদার নিয়োগ দেয় সিটি করপোরেশন। তবে নগরে কয়টি হাট বসবে, সেটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

গত বছর ঈদুল আজহার সময় ১০টি অস্থায়ী হাট বসানোর অনুমতি চাইলে জেলা প্রশাসন তিনটি হাটের অনুমোদন দিয়েছিল। এবার ২৩টি অস্থায়ী হাট বসানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে সিটি করপোরেশন। স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের চাহিদার ভিত্তিতে এসব হাট বসানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।