Thank you for trying Sticky AMP!!

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সনদ হাতে আফগান শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস

বাংলাদেশে এসে জীবন বদলে গেছে

আফগানিস্তানে তালেবান আবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসায় পরিবার নিয়ে বেকায়দায় পড়েন কাবুলের বাসিন্দা মাহাদিয়া আহমেদি। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তবে এই কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েও দমে যাননি। আফগানিস্তান থেকে বাংলাদেশে এসে চট্টগ্রামে অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) শিক্ষা প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছিলেন। স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে সনদও পেয়েছেন।

২০২২ সালে মাহাদিয়াসহ ১৯ আফগান শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিয়ে স্নাতকোত্তর করার সুযোগ দেয় এইউডব্লিউ। সহিংসতা থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষায় ‘মাস্টার অব আর্টস ইন এডুকেশন’ নামে সে বছর চালু হওয়া প্রোগ্রামে ভর্তি হন তাঁরা। আজ রোববার চট্টগ্রাম নগরের একটি হোটেলে সেই প্রোগ্রামের প্রথম ব্যাচে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

বেলা ১১টায় অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেল, সমাবর্তনের গাউন পরে শিক্ষার্থীদের কেউ শূন্যে ছুড়ছিলেন টুপি। কেউ এ দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করছিলেন। উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছিল সবার মধ্যে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের ফাঁকে মাহাদিয়া আহমেদির সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

মাহাদিয়া আহমেদি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আফগানিস্তানের মানুষ ভালো নেই। সেখানে নারীদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। আমার জীবনেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু এখানে এসে জীবন বদলে গেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছি।’

গাউন ও টুপি পরে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আফগান শিক্ষার্থীরা

মাহাদিয়া জানান, আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষা লাভের অধিকার দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। তাই পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে চান তিনি।

কথা হয় আরও তিন আফগান শিক্ষার্থী আরিজু সুলতানি, জুলাইকা মালেকজাই ও এলিজে সুলতানির সঙ্গে। তাঁরা উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সমাবর্তনের মাধ্যমে তাঁদের নতুন জীবন শুরু হলো। এখানে পড়ার অভিজ্ঞতা আজীবন কাজে লাগবে।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, আফগানিস্তানে নারীদের জীবনে যখন দুর্ভোগ নেমে এসেছিল, তখন এইউডব্লিউ এই প্রোগ্রাম চালু করে। এর মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীর জীবনে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা এখন নতুন করে স্বপ্ন দেখতে পারছেন।

এইউডব্লিউর উপাচার্য রুবানা হক বলেন, অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে এই প্রোগ্রাম শেষ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় এই প্রোগ্রাম চলেছিল। এই প্রোগ্রামের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছেন।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এডুকেশনের ডিন ক্রিস্টোফার মরফিউ। তিনি বলেন, মুহূর্তটা সব শিক্ষার্থীর জীবনে অমূল্য। সমাবর্তনের মাধ্যমে নতুন ও কর্মময় জীবনের শুরু হয়। এই প্রোগ্রাম থেকে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ইতিবাচকভাবে বিশ্বকে পরিবর্তন করতে হবে। টেকসই উন্নয়নে শিক্ষার যে গুরুত্ব, তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।