Thank you for trying Sticky AMP!!

হাইকোর্ট ভবন

জামিন হয়নি, তবু জামিন হয়েছে ধরে নোট, আইন কর্মকর্তার কাছে ব্যাখ্যা চাইলেন হাইকোর্ট

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের এক মামলায় আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। তবে জামিন হয়েছে ধরে নিয়ে ‘অস্তিত্বহীন’ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন নিয়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ‘অস্তিত্বহীন’ ওই আদেশ স্থগিত হয়। এমন ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, একজন আইন কর্মকর্তা হয়ে অসত্য তথ্য দিয়ে জনগণের কাছে আদালতকে হেয় করলেন। অথচ ওই মামলা শুনানিই করিনি, আদেশ তো অনেক দূরের বিষয়।

বিষয়টি নজরে এলে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন। পাশাপাশি ওই ভূমিকার জন্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদের কাছে ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে।

আদালত সূত্রের তথ্যমতে, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে কক্সবাজারের এক মামলায় মো. এমরান নামের এক আসামি উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আসামির জামিন আবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট দ্বৈত বেঞ্চের কার্যতালিকায় ১২ মার্চ শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আবেদনের ওপর শুনানি ও আদেশ হয়নি। অথচ ওই আসামির জামিন হয়েছে উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ নোট পাঠান। নোটের পরিপ্রেক্ষিতে ওই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন নিয়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হয়। বিষয়টি নজরে আসার পর বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে ডায়াসে (যেখানে আইনজীবীরা দাঁড়িয়ে শুনানি করেন) আসতে বলেন আদালত।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে বেঞ্চের নেতৃত্বদানকারী বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘ওই মামলায় (ইমরান বনাম রাষ্ট্র) আমরা আসামিকে জামিন দিইনি। অথচ আপিল বিভাগ থেকে জামিন আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ নেওয়া হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেলকে কীভাবে আপনি এমন ভুল তথ্য দিলেন? এখানে অ্যাটর্নি জেনারেলের কোনো দায় দেখছি না। এই কর্মকাণ্ডের জন্য আপনাকে জবাবদিহি করতে হবে।’

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ বলেন, ১২ মার্চের কার্যতালিকায় আগের ক্রমিকে থাকা মামলার জামিনাদেশের বিষয়টি ভুলক্রমে এ মামলা হিসেবে মার্ক (চিহ্নিত) করা হয়। এ কারণে এ ভুল হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘যে আদেশ দেওয়া হয়নি, তা স্থগিতের জন্য কি আপিল বিভাগে যেতে পারেন? একটা অসত্য তথ্যে টিভি চ্যানেলে আমাদের নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার হলো। জনগণের কাছে আদালতকে হেয় করলেন। অথচ ওই মামলা শুনানিই করিনি, আদেশ তো অনেক দূরের বিষয়।’

রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তার উদ্দেশে আদালত আরও বলেন, ‘আমরাও মানুষ, আমাদেরও হৃদয় আছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে আমাদের হৃদয় ভেঙে যায়। সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করেছি। অথচ আমাদের নিয়ে একটা অসত্য তথ্য প্রচার হলো। এর দায় কে নেবে? এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেবেন।’