Thank you for trying Sticky AMP!!

অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ চার কর্মকর্তার দেওয়ানি কারাবাসের রায় স্থগিত

হাইকোর্ট ভবন

আদালতের আদেশ ভঙ্গের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মুরশেদুল কবীরসহ চার কর্মকর্তাকে তিন মাসের সিভিল ইমপ্রিজনমেন্ট (দেওয়ানি কারাবাস) দিয়ে হাইকোর্টের রায় ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে চার কর্মকর্তার করা পৃথক তিনটি আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আবেদনগুলো আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ১৮ মার্চ শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আদালত বলেছেন, সেদিন আবেদনগুলো কার্যতালিকার ১০ নম্বর ক্রমিকের পরে থাকবে।

ব্যাংকটির অপর তিন কর্মকর্তা হলেন ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদা বেগম, অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে (এলপিআর) থাকা উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ সাহা ও প্রধান শাখার মহাব্যবস্থাপক মো. ফজলুল করিম।

আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশ ভঙ্গের অভিযোগে মিজানুর রহমানের (মুন গ্রুপের চেয়ারম্যান) করা পৃথক তিনটি মামলার (ভায়োলেশন) চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ ওই কর্মকর্তাদের তিন মাসের সিভিল ইমপ্রিজনমেন্ট দেওয়া হয়। তাঁদের সম্পত্তি ক্রোকের পাশাপাশি রায় পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। এই রায় স্থগিত চেয়ে চার কর্মকর্তা গতকাল বুধবার পৃথক তিনটি আবেদন করেন, যা বৃহস্পতিবার চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে অগ্রণী ব্যাংকের চার কর্মকর্তার পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শামীম খালেদ আহমেদ, এ এম আমিন উদ্দিন, মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও তানজিব আলম শুনানি করেন। মিজানুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও নুরুল আমীন।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের আইনজীবীদের তথ্যমতে, মুন গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থঋণের চার মামলায় ২০১৭ সালে অগ্রণী ব্যাংক ৫৩৯ কোটি টাকার ডিক্রি পায়। রিট করে কোম্পানি কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের জন্য সুযোগ পায়। তবে করোনার সময় কিস্তির ২৫ শতাংশ টাকা পরিশোধ করা হলে সেসব প্রতিষ্ঠানকে খেলাপি করা যাবে না বলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সে অনুসারে ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে পাওনার ২৫ শতাংশ কিস্তিতে পরিশোধের চিঠি দেওয়া হয়। এতে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঋণের ২৫ শতাংশ পরিশোধ না করলে খেলাপি দেখিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রাহকের ঋণ তথ্য ব্যুরোতে (সিআইবি) প্রতিবেদন পাঠানো হয়। এই চিঠি নিয়ে নিম্ন আদালতে ঘোষণামূলক মামলা করে মুন গ্রুপ। এতে চিঠির ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।

আইনজীবীদের তথ্যমতে, নিম্ন আদালত নিষেধাজ্ঞার আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর বিরুদ্ধে মিজানুর রহমান হাইকোর্টে ফার্স্ট মিস আপিল (প্রথম বিবিধ আপিল) করেন।

এতে চিঠির কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞাও চাওয়া হয়। শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল (সিভিল রুল) দিয়ে ব্যাংকের ওই চিঠির ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন। তবে নির্ধারিত সময়ে ঋণের ২৫ শতাংশ কিস্তি পরিশোধ না করায় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে অগ্রণী ব্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলো খেলাপি দেখিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে প্রতিবেদন পাঠায়।

এ নিয়ে অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত বছর তিনটি ভায়োলেশন মামলা করেন মিজানুর রহমান। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। শুনানি শেষে ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল অ্যাবসলিউট (রুল যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন। সিভিল ইমপ্রিজনমেন্ট হলে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তির কারাবাসের খরচ বাদীকে বহন করতে হয় বলে জানান আইনজীবীরা।