Thank you for trying Sticky AMP!!

একজন ডলি আক্তারের লড়াই

ডলি আক্তার

সময়টা ২০০৯ সাল। ঢাকার একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় কাজ নেন ১৬ বছরের এক কিশোরী। দিনের লম্বা সময় কাজের বিনিময়ে সামান্য মজুরি পেতেন। বিষয়টি মেনে নিলেও তাঁর থেকে বয়সী একজন লাইন ম্যানেজার অনৈতিক প্রস্তাব দেবেন, তা তিনি আশা করেননি।

একদিন লাইন ম্যানেজার সেই কিশোরী শ্রমিককে কুপ্রস্তাব দেন। আতঙ্কিত হয়ে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। নতুন আরেকটি কারখানায় কাজ নেন। সেখানেও একই সমস্যা। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন ঘুরে দাঁড়ানোর। নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কারখানার অন্য নারীদের নিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন করার উদ্যোগ নেন। তখন বিষয়টি নিজেদের আয়ত্তে নেওয়ার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁকে এক ঘণ্টা আটকে রেখে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। একই সঙ্গে কিশোরীটি যেন অন্য কারখানায় চাকরি না পান, সেই কূটকৌশলও করে তারা। যে কারণে চার-পাঁচটি কারখানায় কাজ নিলেও তিনি বেশি দিন টিকতে পারেননি। চাকরি না পেয়ে ছয় মাস বেকার থাকতে হয় তাঁকে।

এত কিছুর পরও থেমে থাকেননি গাইবান্ধার ওই কিশোরী। নারী শ্রমিক নির্যাতন ও হয়রানির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন। তাঁর নাম ডলি আক্তার। তিনি বর্তমানে শ্রমিক সংগঠন সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের টঙ্গী থানা কমিটির সভাপতি। ২০১৫ সালে কারখানার কাজ ছেড়ে তিনি শ্রমিক সংগঠনের কাজে জড়িয়ে পড়েন। তাঁকে নিয়ে ইংরেজি দৈনিক গার্ডিয়ান গত মঙ্গলবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ডলি আক্তার গার্ডিয়ানকে বলে, ‘আমরা যদিও নির্যাতিত ও হয়রানির শিকার মেয়েদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করি, তারপরও তাঁরা বিপদে থাকেন। তাঁরা অনেক বছর ভয়ের মধ্যে জীবন যাপন করে থাকেন।’

প্রথম আলোর পক্ষ থেকে গতকাল ডলি আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন নেই, এমন কারখানাতেই নারী শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনা বেশি ঘটে। নির্যাতিত হওয়ার পরও অনেকে ভয়ে, অনেকে আবার লজ্জায় অভিযোগ করেন না। ফলে অধিকাংশ ঘটনাই ধামাচাপা পড়ে যায়। তবে প্রতিটি কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন হলে নির্যাতনের ঘটনা কমে আসবে বলে মন্তব্য করে ডলি।