Thank you for trying Sticky AMP!!

এবার সীতারমণের লড়াই স্বামী প্রভাকরের সঙ্গে

ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ

ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ তাঁর স্ত্রী। কিন্তু সরকারের আর্থিক নীতির সমালোচনা করতে পিছপা হন না পরকলা প্রভাকর। এবার কোভিড-১৯ নিয়ে স্ত্রীর এক মন্তব্যের জেরে খেপলেন প্রভাকর।

নির্মলা সীতারমণ বলেছিলেন, ‘কোভিড দৈবদুর্বিপাক বা ঈশ্বরের মার। আর তার জেরেই অর্থনীতির সংকোচন।’ কার্যত স্ত্রীর মন্তব্যকেই কটাক্ষ করে গতকাল নির্মলার স্বামী অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের সাবেক জনসংযোগ উপদেষ্টা ও পেশাদার অর্থনীতিবিদ পরকলা প্রভাকরের মন্তব্য, ‘আসল দৈবদুর্বিপাক হলো দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের মধ্যে সুসংহত ভাবনাচিন্তার অভাব।’ ইকোনমিক টাইমস সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে।

গত বছর অক্টোবরে প্রভাকর অভিযোগ করেছিলেন, অর্থনীতিতে ঝিমুনি ধরলেও সরকার অস্বীকার করছে। ৩ সেপ্টেম্বর টুইটে বললেন, এই অস্বীকৃতির মনোভাবের কারণে ভারতীয় অর্থনীতি ২৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। নিজের স্ত্রীর কাছেই প্রভাকরের প্রার্থনা, ‘ঈশ্বরের দোহাই, এবার তো কিছু করুন!’ তিনি আরও বলেছিলেন, কংগ্রেস সরকারের সমালোচনা না করে বিজেপির উচিত, নরসীমা রাও ও মনমোহন সিংয়ের নীতি গ্রহণ করা।

ভারতে অর্থবছর শুরু হয় এপ্রিল মাস থেকে। বছরের প্রথম প্রান্তিক এপ্রিল-জুনে জিডিপির ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ সংকোচন হয়েছে। প্রথমে না মানলেও গতকাল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় মাসিক প্রতিবেদনে স্বীকার করেছে, এপ্রিল-জুনে ভারতের জিডিপির সংকোচনের মাত্রা অন্যান্য বড় অর্থনীতির সংকোচনের তুলনায় বেশি। কড়া লকডাউনের ফলেই জিডিপি এতটা কমেছে। নির্মলা আগেভাগেই বলে রেখেছিলেন, কোভিড ঈশ্বরের মার। এর ধাক্কায় অর্থনীতির সংকোচন হতে পারে। বাস্তবে তা-ও হয়েছে। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, লকডাউনের অনেক আগে থেকেই অর্থনীতিতে ঝিমুনি চলছে। তার প্রধান কারণ, প্রধানমন্ত্রীর নোট বাতিল ও ত্রুটিপূর্ণ জিএসটির মতো ভুল নীতি।

বিরোধীদের সুরে নির্মলার স্বামী বলেছেন, সব দোষ কোকিলের ঘাড়ে চাপালে চলবে না। কোভিড তো এসেছে অনেক পরে—এই বছর। তার আগে থেকেই অর্থনীতির ঝিমুনি চলছে। কিন্তু সেটা মোকাবিলা না করে সরকার বাস্তবতা অস্বীকার করে চলেছে।
গত বছরের অক্টোবর মাসে প্রভাকর নিবন্ধ লিখে অভিযোগ করেছিলেন, সরকার অর্থনীতির বাস্তব সমস্যা অস্বীকার করছে। পরিসংখ্যান চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, একের পর এক ক্ষেত্র কীভাবে গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।
বিজেপির ব্যাখ্যা, রাজনৈতিক মতাদর্শের নিরিখে নির্মলা ও প্রভাকর বরাবরই উল্টো সারিতে। স্ত্রী যখন বিজেপিতে যোগ দেন, তখন তার বিরোধী দলের সমর্থক তিনি। এভাবে অস্বস্তি ঢাকার চেষ্টা হলেও বিরোধীদের প্রশ্ন রোখা যাচ্ছে না।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী গতকাল আবার সরব হয়েছেন। আগস্ট মাসে ভারতে বেকারত্বের হার ৮ দশমিক ৪ শতাংশে উঠেছে—স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে মোদি সরকারের সমালোচনা করতে ছাড়েননি তিনি। তাঁর মন্তব্য, ‘১২ কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি গায়েব। ৫ লাখ কোটি ডলারের অর্থনীতি গায়েব। আমজনতার আয় গায়েব। প্রশ্ন করলে উত্তর গায়েব।’

কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার অভিযোগ, আইএলওর প্রতিবেদন অনুযায়ী ৪০ কোটি ভারতীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। এদিকে ২ লাখ ১৪ হাজার সরকারি শূন্য পদের বিপরীতে ২ কোটি ৯০ লাখ আবেদন পড়েছে।