Thank you for trying Sticky AMP!!

এশিয়ার সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে বাংলাদেশের

সময় এখন এশিয়ার, আর ম্যাককিনসে গ্লোবাল ইনস্টিটিউট বলছে, ভবিষ্যৎ এখন এশিয়ার হাতে। ২০০০ সালে বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির এক-তৃতীয়াংশ আসত এশিয়া থেকে। ম্যাককিনসে এখন বলছে, ২০৪০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক জিডিপির ৫০ শতাংশের বেশি আসবে এই মহাদেশ থেকে। সুখবর হলো, ২০২০ সালে এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে বাংলাদেশের, ফোর্বস ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেক্সটাইল খাতে ক্রমবর্ধমান বিদেশি বিনিয়োগ, স্বল্প মজুরির শ্রমিক, তৈরি পোশাক খাত ও পাদুকাশিল্পের হাত ধরে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ হবে। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের নিচে হয়নি। দেশে তৈরি পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা, ফোর্বস বলছে, এই নিম্ন মজুরির কারণে টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক খাতে বিপুল বিদেশি বিনিয়োগ আসছে।

অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও উন্নত জীবনমানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধির হার বাড়ছে বলে মনে করেন বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএইচএস মারকিটের প্রধান অর্থনীতিবিদ রাজীব বিশ্বাস।
তবে দেশের স্থানীয় গণমাধ্যমের সূত্রে ফোর্বস জানিয়েছে যে সহজে ব্যবসার সূচকে উন্নতি হওয়ার কারণে ২০১৯ সালের প্রথমার্ধে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ।

এশিয়া মহাদেশে প্রবৃদ্ধির হারে দ্বিতীয় স্থানে ভারত থাকবে বলে জানিয়েছে ফোর্বস। এই পঞ্জিকা বর্ষে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৭ দশমিক ২ শতাংশ, যদিও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। দেশটির সরকার উৎপাদন খাতে বিশেষ করে ইলেকট্রনিক পণ্যের নতুন শক্তি হতে চায়। এই মুহূর্তে ভারতের মূল আটটি শিল্পে শ্লথগতি চলছে, অনেক শিল্পে পুঁজি ও ঋণের সংকট আছে, এসব কারণে দেশটির প্রবৃদ্ধির হার এর চেয়ে বেশি হবে না। তবে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতিতে বেশ কিছু প্রণোদনা দেওয়াসহ করপোরেট করহারে ছাড় দিয়েছে, এতে দেশটির শিল্প খাত কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে বলে মনে করছে ফোর্বস।

সোনা ও রুপার খনি, ধাতু প্রক্রিয়াকরণ ও রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের ওপর ভর করে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ তাজিকিস্তান বেশ ভালো করবে এ বছর। তাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ শতাংশ। ২০১৬ সালে তাজিকিস্তানের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ২০১৭ ও ২০১৮ সালে যথাক্রমে ৭ দশমিক ১ ও ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। বিশ্বব্যাংক বলছে, চাঙা দেশীয় চাহিদা এবং ‘শিল্প ও সেবা খাতের’ ওপর ভর করে দেশটির অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে।

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের মোট দেশজ উৎপাদনের আকার মাত্র ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। ফলে খুবই নিম্ন ভিত্তি থেকে শুরু করেছে তারা। পাঁচ বছর ধরে দেশটির উৎপাদন খাত বড় হচ্ছে। এতে দেশটির অর্থনীতি দ্রুতলয়ে বাড়ছে। ২০২০ সালে তাদের প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ, এশিয়ায় চতুর্থ। দীর্ঘ সামরিক শাসনের পর দেশটি এখন নতুন সরকারের নেতৃত্বে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম চালাচ্ছে, ফলে উন্নয়নও ত্বরান্বিত হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ভালো কথা, কিন্তু সেটাই সবকিছু নয়। কর্মসংস্থান ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে প্রবৃদ্ধি কী ভূমিকা রাখছে, সেটাই বড় কথা। আবার এই প্রবৃদ্ধির হার ধরে রাখতেও আর্থিক, রাজস্ব ও সামাজিক খাতে সংস্কার লাগবে। এর জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার লাগবে। পাশাপাশি ব্যক্তি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

এরপর মিয়ানমারের সমান ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে পঞ্চম স্থানে থাকবে কম্বোডিয়া। ষষ্ঠ স্থানে থাকবে ভিয়েতনাম। তাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী আরও যেসব দেশের প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের ওপরে থাকবে সেগুলো হলো নেপাল, মালদ্বীপ, লাওস, ফিলিপাইন ও মঙ্গোলিয়া।

প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে শীর্ষ এশীয় অর্থনীতি দেশ
বাংলাদেশ ৮%
ভারত ৭.২%
ভিয়েতনাম ৬.৭%
ফিলিপাইন ৬.২%
চীন ৬%
ইন্দোনেশিয়া ৫.২%
মালয়েশিয়া ৪.৭%