Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনার প্রভাবে আটকে আছে রোজার পণ্য

ফাইল ছবি

রোজা আসছে। রোজায় বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের আমদানি পণ্যের অনেক চালান এলেও বাজারজাত হয়নি। বন্দর, ডিপো ও চট্টগ্রাম এবং নারায়ণগঞ্জের ঘাটে আটকা পড়ে আছে এসব পণ্য। করোনাভাইরাসের প্রভাবে পরিবহন ও শ্রমিকসংকট, বন্দরে জট ও পণ্য খালাসে যুক্ত সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সীমিত করায় বাজারজাত করতে দেরি হচ্ছে। এর প্রভাবে রোজার পণ্যের দাম বেড়েছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকাল মঙ্গলবারের বাজারদর অনুযায়ী রোজায় বেচাকেনা হয়, এমন পণ্যের প্রায় সব কটির দাম বেড়েছে। মটর ডাল, মসুর ডাল ও ছোলা—এই তিন ধরনের ডালের দাম এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১৯ শতাংশ। খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। চিনির দাম বেড়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। খেজুরের দাম বেড়েছে ৯ শতাংশ।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রথম আলোকে বলেন, এ মুহূর্তে খাদ্যশস্য ও রোজার পণ্য খালাসে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। বন্দরে, ঘাটে, সড়কে ভোগ্যপণ্য পরিবহনের কার্যক্রম যাতে সচল থাকে, তা মাঠপর্যায়ের প্রশাসনের তদারকি করা উচিত। কারণ, আমদানি পণ্য যদি ধারাবাহিকভাবে বাজারজাত করা না হয়, তাহলে এর প্রভাব পড়বে দামে।

ঘাটে ঘাটে পণ্য খালাস ব্যাহত

খাদ্যশস্য—গম, ডাল, অশোধিত চিনি আমদানি হয় বড় জাহাজে। বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে লাইটার জাহাজে এসব পণ্য স্থানান্তর করে নদীপথে সারা দেশের ৩৯টি ঘাটে নিয়ে খালাস করা হয়। সাধারণ ছুটির পর থেকে গত সোমবার পর্যন্ত বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ১০ লাখ ৪০ হাজার টন ভোগ্যপণ্য খালাস হয়। এর মধ্যে রোজার পণ্য মসুর ডাল, মটর ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি খালাস হয় ৬ লাখ ৩৮ হাজার টন।

>দেশের ২৯টি ঘাটে আটকা পাঁচ লাখ টন ভোগ্যপণ্য। এর প্রভাবে বেড়েছে রোজার পণ্যের দাম।

লাইটার জাহাজে পরিবহন করে এসব পণ্যের বেশির ভাগ খালাস হয় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ঘাট ও নারায়ণগঞ্জ এলাকার ঘাটগুলোতে। করোনার প্রভাবে এই দুই জায়গায় পণ্য খালাস বারবার ব্যাহত হচ্ছে। অর্থাৎ বন্দরের বহির্নোঙরে খালাস হলেও তা আমদানিকারকের গুদাম হয়ে বাজারজাত করতে সময় লাগছে। যেমন বিএসএম গ্রুপের আমদানি করা ছোলা, মসুর ডাল ও গমবাহী ১৪টি লাইটার জাহাজ ১৫ দিন ধরে নারায়ণগঞ্জের ঘাটে আটকা আছে। সেখানে করোনাভাইরাসের প্রেক্ষাপটে শ্রমিকসংকট ও পরিবহন সমস্যায় খালাস ব্যাহত হচ্ছে।

লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, দেশের ৩৯টি ঘাটে এখন প্রায় ৪০০ জাহাজে প্রায় ৫ লাখ টন মটর ডাল, মসুর ডাল, অশোধিত চিনি ও গমের মতো ভোগ্যপণ্য আটকা পড়েছে। শ্রমিকসংকট, করোনার প্রভাবে এসব ঘাটে পণ্য খালাস কার্যক্রম একেবারে সীমিত আকারে চলছে।

কনটেইনারেও আছে রোজার পণ্য

কনটেইনারে ছোলা, মসুর, খেজুর, আদা, রসুন, পেঁয়াজ ও পরিশোধিত চিনির মতো পণ্য আমদানি হয়। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দরে কনটেইনারে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের মতো পণ্য আছে। তবে পরিমাণে বেশি নয়। আবার ছোলা, খেজুরের মতো কিছু পণ্য বন্দর থেকে ডিপোতে নিয়ে খালাস করতে হয়। বেসরকারি কনটেইনার ডিপোর হিসাবে ডিপোগুলোতে ৭২ কনটেইনার ছোলা এবং ২০৬ কনটেইনার চিনি পড়ে আছে। এ ছাড়া খেজুরবাহী ছোলাও আটকে আছে। সব কার্যক্রম শেষ করে ব্যবসায়ীরা ধীরে ধীরে খালাস নিচ্ছেন।

খাতুনগঞ্জের ফারুক ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই কনটেইনার খেজুর ৪ এপ্রিল বন্দরে আসার পরও কয়েক দিন আগে ডিপোতে নেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় নথি না পেয়ে এখনো খালাস করতে পারিনি। আবার ১৩ এপ্রিল বন্দরের বহির্নোঙরে আরেক জাহাজে আনা দুটি কনটেইনার খেজুর এখনো জাহাজ থেকেই নামানোই যায়নি। এসব খেজুর রোজার আগেই বাজারজাত করার কথা থাকলেও তা আর হচ্ছে না।’