Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনা প্রতিরোধে সুরক্ষিত পোশাক বানানো কাল শুরু

পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বা বিশেষ সুরক্ষিত পোশাক। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুরক্ষা সরঞ্জামের সংকট প্রকট হচ্ছে। চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সুরক্ষা সরঞ্জামের সংকট কাটাতে ইতিমধ্যে পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বা বিশেষ সুরক্ষিত পোশাক তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে পে ইট ফরোয়ার্ড, মানুষ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বুয়েট অ্যালামনাইসহ আরও দুটি সংগঠন। গতকাল শনিবার পিপিইয়ের ৩০টি নমুনা বা স্যাম্পল তৈরি করা হয়েছে।

সংগঠনগুলোর উদ্যোগে পিপিই তৈরিতে সহায়তা দিতে এগিয়ে আসেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার (এমঅ্যান্ডএস) বাংলাদেশ প্রধান স্বপ্না ভৌমিক। এমঅ্যান্ডএসের সদস্য কারখানাতেই পিপিই তৈরি হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার কয়েকজন উদ্যোক্তাও কাজ করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মানুষ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রনাথ, বুয়েট অ্যালামনাইয়ের প্রতিনিধি ফজলে মাহবুব ও পে ইট ফরোয়ার্ডের প্রতিষ্ঠাতা বাদল সৈয়দের উদ্যোগে পিপিই বানানোর উদ্যোগ প্রথমে নেওয়া হয়। পরে উদ্যোগটির সঙ্গে যুক্ত হয় রোটারি ক্লাব ঢাকা নর্থ ওয়েস্ট অধীনে কয়েকটি রোটারি ক্লাব এবং বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ট্যাক্সেশন অ্যাসোসিয়েশন। প্রতিটি সংগঠনই পিপিইর জন্য তহবিল সংগ্রহ করেছে। তবে অনেক কারখানায় পোশাকটি বানানোর অনুরোধ করলেও কেউ রাজি হয়নি। পরে বিষয়টি স্বপ্না ভৌমিককে অবহিত করলে তিনি কারখানার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি অন্যান্য সহযোগিতা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পে ইট ফরোয়ার্ডের প্রতিষ্ঠাতা বাদল সৈয়দ আজ রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নমুনা তৈরির পর গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দেখানো হয়েছে। তারা মৌখিকভাবে অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা এখন পর্যন্ত যে তহবিল সংগ্রহ করেছি, তাতে চার লাখ পিপিই তৈরি করতে পারব। এসব পিপিই বিভিন্ন হাসপাতালে আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিনা মূল্যে দিতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা দুই লাখ পিপিই প্রস্তুতের ক্রয়াদেশ দিয়েছি।’

বাদল সৈয়দ বলেন, ‘পিপিই তৈরিতে স্বপ্না ভৌমিক অনেক সহযোগিতা করেছেন। তিনি এগিয়ে না এলে পিপিই তৈরির উদ্যোগটি বড় ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যেত।’

জানতে চাইলে পে ইট ফরোয়ার্ডের নির্বাহী সভাপতি ওয়াহিদ হোসেন বলেন, ‘পিপিইর জন্য কাপড় উৎপাদন শুরু হয়েছে। আগামীকাল সোমবার নাগাদ কারখানায় চলে আসবে। তারপরই পিপিই উৎপাদন শুরু হবে। বর্তমানে যে কাপড় উৎপাদন হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে সরবরাহ করা পিপিইর মতোই মানসম্মত হবে। তবে আরও ভালো মানের পিপিই বানানোর জন্য এমঅ্যান্ডএস আমাদের সহযোগিতা করছে। আশা করছি সেটিও শিগগিরই পেয়ে যাব।’ তিনি বলেন, ‘আজ রোববার সকালে স্বপ্না ভৌমিকের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তিনি পিপিই সেলাইয়ের আর্থিক বিষয়টি দেখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’

ওয়াহিদ হোসেনের বক্তব্যের সূত্র ধরে যোগাযোগ করলে স্বপ্না ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চার লাখ পিছ পিপিই সেলাই বিনা মূল্যে করার ব্যবস্থা করব।’ 

এর আগে আজ সকালে স্বপ্না ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘পিপিই বানানোর বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সাধারণ সেলাই মেশিনে পোশাকগুলো সেলাই করা হয়েছে। সেলাইয়ের কারণে পুরোপুরি বায়ুরোধী করা যায়নি। আজ আমরা সারা দিন সেই কাজটি করব। আশা করছি, দুই–তিন দিনের মধ্যেই প্রাথমিকভাবে ব্যবহার উপযোগী পিপিই বানানো সম্ভব হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পিপিইর জন্য বিশেষ ধরনের নন-ওভেন কাপড়ের দরকার। বর্তমান পরিস্থিতিতে চীন থেকে সেই কাপড় আনতে অনেক সময় লাগবে। সে জন্য আমরা দেশেই উৎপাদন করার পরিকল্পনা করছি। সে জন্য বস্ত্রকলমালিকদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। বেশি পরিমাণে পিপিই বানানোর জন্য চারটি কারখানার সঙ্গে আমি আজ রোববার বৈঠক করব।’