Thank you for trying Sticky AMP!!

চট্টগ্রামে গাড়িশ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

ফাইল ছবি

চার দিনের মাথায় কনটেইনার পরিবহনকারী গাড়িশ্রমিকেরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন। আজ বিকেল চারটা থেকে এই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়। তবে আজও সকালে দুটি জাহাজ ১ হাজার ৪৩০ কনটেইনার রপ্তানি পণ্য ফেলে বন্দর জেটি ছেড়ে গেছে। এ নিয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আগে তিন দিনে ২ হাজার ৬৩১ কনটেইনার পণ্য রপ্তানি হয়নি।

নিয়োগপত্রের দাবিতে গত বুধবার সকাল থেকে আকস্মিক কর্মবিরতি শুরু করে কনটেইনার পরিবহনকারী গাড়িচালক ও শ্রমিকদের সংগঠন ‘প্রাইম মুভার ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়ন’। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দর ও ডিপোর মধ্যে চলাচলকারী ৮৫০টি প্রাইম মুভার ট্রেইলার গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসব গাড়িতে করে ডিপো থেকে রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার বন্দরে নেওয়া হয়।

কর্মবিরতি শুরুর পর প্রতিদিন রপ্তানি পণ্য ফেলে যাওয়ার ঘটনা ঘটলেও আজ শনিবার দুপুরে বন্দর ভবনে গাড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ও ডিপো মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে আজ প্রতিটি ডিপো একটি করে নিয়োগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পালাক্রমে আগামী ২১ মার্চের মধ্যে ডিপোর সব গাড়ির শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা নিজেরা বৈঠক করে বিকেল চারটা থেকে কাজে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন।

জানতে চাইলে ‘প্রাইম মুভার ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়নের’ সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, দাবি মেনে নেওয়ায় কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। ডিপো ও বন্দরের মধ্যে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে।

কর্মসূচি প্রত্যাহারের আগে আজ শনিবার দুপুরে দুটি জাহাজ বুকিং অনুযায়ী রপ্তানি পণ্য না পেয়ে বন্দর ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাংগামী ‘এক্সপ্রেস কাবরু’ জাহাজটিতে রপ্তানি পণ্যের ১ হাজার ৩৪২ একক কনটেইনার নেওয়ার কথা ছিল। গাড়িশ্রমিকদের কর্মবিরতিতে ডিপো থেকে কোনো রপ্তানি পণ্যই বন্দরে এনে জাহাজে তুলে দেওয়া যায়নি। অগত্যা বন্দরে থাকা মাত্র ১০০ কনটেইনার নিয়েই ছেড়েছে জাহাজটি। এই জাহাজটির মতো ‘এমভি পেনাং ব্রিজ’ও রপ্তানি পণ্যবাহী ২৫ একক কনটেইনার নিয়ে কলম্বোর উদ্দেশে রওনা হয়েছে। অথচ এই জাহাজেও নেওয়ার কথা ছিল ২১৩ একক কনটেইনার।

জানতে চাইলে পেনাং ব্রিজ জাহাজের স্থানীয় প্রতিনিধি ‘ওশেন নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস’–এর মহাব্যবস্থাপক রবি শংকর দাশ প্রথম আলোকে বলেন, কর্মবিরতির কারণে বেসরকারি ডিপো থেকে রপ্তানি পণ্যবাহী একটি কনটেইনারও আনা যায়নি। কর্মবিরতির আগে বন্দরে যে কয়টি কনটেইনার ছিল সেগুলোই নিয়ে যেতে হয়েছে।

সারা দেশ থেকে রপ্তানি পণ্যের ৮৯ শতাংশ চট্টগ্রামের ১৮টি ডিপোতে এসে জমা হয়। এরপর সেখান থেকে এসব পণ্য কনটেইনারে বোঝাই করে বন্দরে নিয়ে অপেক্ষমাণ জাহাজে তুলে দেওয়া হয়। ডিপো থেকে রপ্তানি পণ্য পরিবহন বন্ধ হওয়ায় এখন শুধু ঢাকার কমলাপুর ডিপো, পানগাঁও টার্মিনাল ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল থেকে পণ্য বন্দরে পৌঁছানো যাচ্ছে, যা দেশের মোট রপ্তানি পণ্যের ১১ শতাংশের মতো।

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর বন্দর ও জাহাজীকরণবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এই কর্মবিরতিতে পোশাক খাতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। যেসব রপ্তানি পণ্য সময়মতো জাহাজে তুলে দেওয়া যায়, সেগুলো বিদেশি ক্রেতাদের হাতে সময়মতো পৌঁছাচ্ছে না। বিদেশে দেশের ভাবমূর্তির বড় ক্ষতি হলো।