Thank you for trying Sticky AMP!!

চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪-৫ টাকা

চালের ছবিটি প্রতীকী।

রংপুরের বদরগঞ্জে এবার চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত ১৫ দিনে কেজিতে বেড়েছে ৪-৫ টাকা। এতে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আজ বুধবার বদরগঞ্জের চালের খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আঘাত হানার পর থেকে। ওই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে দেশে ফসলহানির সংবাদ মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন অটো রাইস মিলের মালিকেরা।

কয়েকজন চাল ব্যবসায়ীর ভাষ্য, গত ১৫ দিনের ব্যবধানে ৫০ কেজি ওজনের বস্তাপ্রতি (মিনিকেট সেদ্ধ) চালে প্রথমে ১০০ টাকা পরে ১৫০ টাকা, গতকাল মঙ্গলবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ টাকায়। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় স্বাভাবিকভাবে এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। ১৫ দিন আগে ৫০ কেজি ওজনের মিনিকেট চালের বস্তা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা। গতকাল তা বিক্রি হয়েছে দুই হাজার টাকায়। অর্থাৎ পাইকারি বাজারেই কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে চার টাকা।

খুচরা চাল ব্যবসায়ী নিতাই চন্দ্র রায় বলেন, মোকামেই চালের দাম বেশি। এ কারণে কেজিতে ৪-৫ টাকা বেড়েছে। এমনকি গুটিস্বর্ণা জাতের মোটা চালেরও দাম কেজিতে বেড়েছে ৪ টাকা। বাজারে এই চালের তেমন চাহিদা ছিল না।

বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ খুচরা বাজারে বিআর ২৮ জাতের চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৩৪-৩৫ টাকা, গুটিস্বর্ণা (মোটা চাল) ২৫-২৬ টাকা এবং মিনিকেট ৪১-৪২ টাকা। ১৫ দিন আগে ২৮ জাতের চালের দাম ছিল ৩০ টাকা, গুটিস্বর্ণা ২০-২১ এবং মিনিকেট ৩৬-৩৭ টাকা। তবে চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে খুচরা বা পাইকারি ব্যবসায়ীরা কেউই নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। কথা বলার সময় সবার মধ্যেই একধরনের ভীতি লক্ষ করা যায়।

বদরগঞ্জ স্টেশন সড়কের বাসিন্দা সুমন রায় (৪৫) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০ টাকা কেজির পেঁয়াজ এখন আড়াই শ টাকা। এখন আবার চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। জনগণ চুপ মেরে আছে। ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।

রিকশাভ্যানচালক শওকত হোসেন (২৮) বলেন, ‘দাম বাড়ি যাওয়াতে পেঁয়াজ খাওয়া ছাড়ি দিচি। এ্যালা চাউলের দাম বাড়োচে। ১৫ দিন আগোত গুটিস্বর্ণা চাউল কিনচি ২১ টাকা কেজি। সেই চাউল আইজ (গতকাল) কিননো ২৬ টাকা কেজি। শুননো চাউলের দাম বোলে (নাকি) আরও বাড়বে।’

আমরুলবাড়ি গ্রামের কৃষক বরকত আলী সরকার বলেন, ‘ধান কাটিয়া বাজারোত বেচাচি খরচে ওটে নাই। এ্যালা যখন হামার ঘরোত ধান নাই তখন দাম খালি বাড়োওচে। হামার কেষকের পোড়া কপাল!’

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বদরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আফজাল হোসেন প্রামাণিক বলেন, এবার ধান বিক্রি করে কৃষক উৎপাদন খরচ ওঠাতে পারেননি। অনেকে ধান বাজারে নিয়ে এসে ক্রেতার অভাবে বিক্রি করতে না পেরে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন। সেই ধানের পরিবহন খরচ দিতে গিয়ে অনেক কৃষক চোখের পানি পর্যন্ত ফেলেছেন। এই ধানই রয়েছে ব্যবসায়ীদের গুদামে। এখন ব্যবসায়ীরা তা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। কয়েক বছর ধরে অব্যাহত লোকসানের কবলে কৃষকের মেরুদণ্ডই অনেকটা ভেঙে গেছে। সরকারের উচিত কৃষকের দিকে নজর দেওয়া।