Thank you for trying Sticky AMP!!

দেশের জন্য ঘরে থাকা এখন আরেকটু সহজ

কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে হোসেন তার ফোনে অন্যরকম একটা নোটিফিকেশন পেল, ‘প্লিজ আমার বাবাকে ০১৭######## নম্বরে কল করে এই ঠিকানায় ডেলিভারি করুন। *ঠিকানা*। খাবারের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার ডেলিভারির নতুন এই কাজের প্রতি হোসেনের ভালোবাসা বেড়ে গেল কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই। তিনি বলছিলেন, এত দিন আমি মানুষের কাছে কেবল একজন ডেলিভারি এজেন্টই ছিলাম। ডেলিভারি করি, টাকা নিই, ব্যাস এই! তবে বিষয়টি এখন বদলে গেছে। অনেকেই এখন আমাকে ধন্যবাদ দেন, ভালো ব্যবহার করেন। আমি জানি যে বাইরে বের হওয়াতে ঝুঁকি আছে, তবে অন্যের মুখে হাসি ফুটিয়ে হিরো হওয়া এক অন্যরকম অনুভূতি।

হোসেনের মতো উদ্যমী, সাহসী এজেন্টদের সঙ্গে নিয়ে সহজ ফুড ফেব্রুয়ারিতে অন-ডিমান্ড গ্রোসারি ডেলিভারির যাত্রা শুরু করে। লক্ষ্য ছিল সহজ: সাধারণ মানুষ এই সুপার অ্যাপ দিয়ে যেন শুধু খাবার নয়, তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোও কিনতে পারেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক প্রবীণ, হাঁপানি রোগী এবং বাড়ি থেকে কাজ করা কর্মীরা বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন ওষুধ কেনা ও বাজার করা নিয়ে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকেই সহজ উত্তরাতে একটি পাইলট প্রজেক্ট হাতে নেয় গ্রাহকদের দোরগোড়ায় প্রয়োজনীয় বাজারসহ বিভিন্ন গ্রোসারি ডেলিভারির। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের জন্য, যারা বাইরে গিয়ে বাজার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।

তবে এক মাস আগে সহজ কল্পনাই করেনি যে সেই ছোট উদ্যোগই তাদের সাহায্য করবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়া সহজ গ্রোসারি ও মেডিসিন সেকশন পুরোদমে চালু করতে।

‘Flattening the curve’ এর উদ্দ্যেশ্যে সরকার ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটির দিন ঘোষণা করার আগে থেকেই সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে যে খুব শিগগিরই জরুরি বাজার করাও কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। আবার ঢাকা এবং চট্টগ্রামের মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরের বাসিন্দাদের ঘরে থাকা নিশ্চিত হবে এমন এক উপায়ও বের করা প্রয়োজন ছিল। এসব চিন্তা করেই একটি ছোট দল ২২ মার্চের মধ্যেই ফুল সার্ভিস নামানোর প্রতিজ্ঞা করেন, যাতে দুই প্রধান শহর পুরোপুরি সার্ভিসের আওতায় থাকে। আর এর ফল স্বরূপই আগোরা সহ ২৫০+ স্বতন্ত্র ফার্মাসি, সুপার শপ এবং গ্রোসারি দোকানের সহযোগিতায় মাত্র ৩ দিনের মধ্যেই গ্রোসারি ও মেডিসিন সেকশনের অপারেশন সহজ পরীক্ষামূলক থেকে সম্পূর্ণভাবে চালু করতে সক্ষম হয়! কিছুদিনের মধ্যেই আরও যোগ হয় মীনা ক্লিক, স্বপ্ন এবং ইউনিমার্ট।

অন-ডিমান্ড লজিস্টিক সার্ভিস খাতে এমন প্রবৃদ্ধি হওয়া সত্ত্বেও ডেলিভারি এজেন্টদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্যাপারে উদ্বেগ থেকেই যায়। সহজের ফুড অপারেশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘২ সপ্তাহেরও কম সময়ে আমরা ১৫ হাজার জনেরও বেশি লোককে নিজ বাড়িতে থাকতে সহায়তা করেছি। অবশ্য আমাদের এজেন্টরা এখনো বাইরে থাকছেন - আর সে জন্য আমরা আমাদের এজেন্টদের মাস্ক, গ্লাভস এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করেছি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি, সঙ্গে গ্রাহকদেরও উৎসাহিত করছি কার্ড/মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে পেমেন্ট করে স্পর্শবিহীন ডেলিভারি নিতে। সহজের হাবগুলোতে এবং রেস্তোরাঁ বা সুপার শপগুলোতে-প্রতি ঘণ্টায় তাদের হাত ধোয়ার জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এটি এখন আর শুধু নির্দেশনা নয় বরং দায়িত্ব হয়ে উঠেছে, নিজেকে এবং তাদের পরিবারকে বাঁচানোর।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্পর্শবিহীন সেইফ ডেলিভারি নিশ্চিত করার জন্য শুধু রেস্টুরেন্ট আর সুপার শপই নয়, সহজ জিএসকে এবং ম্যারিকো’র মতো আরও গ্রাহক পণ্য সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে, যাতে জনসাধারণের ঘরে সরাসরি পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত হয়। সহজ এবং অন্যান্য অন-ডিমান্ড গ্রোসারি পরিষেবাগুলো কেবল গ্রাহকদের ঘরে থাকা নিশ্চিত করছে তাই নয়, অর্থনীতির চাকাও সচল রাখছে, সেই সঙ্গে তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে প্রয়োজনীয় পণ্য, নিরাপদে।