Thank you for trying Sticky AMP!!

পণ্যের মান-বৈচিত্র্য বাজার ও আইটিভিত্তিক সেবায় প্রাধান্য

তিন বছর মেয়াদি নতুন রপ্তানি নীতি ২০১৫-১৮ অনুমোদন করেছে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। নীতিমালায় রপ্তানিমুখী শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি, পণ্যের গুণগত মান ও প্রতিযোগিতামূলক দাম নিশ্চিতকরণ, পণ্য বহুমুখীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণে জোর দেওয়া হয়েছে। এতে সম্ভাবনাময় তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য-সেবা রপ্তানি এবং ই-কমার্সও অগ্রাধিকার পেয়েছে।
সচিবালয়ে গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নতুন রপ্তানি নীতি অনুমোদন করা হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য জানান।
এদিকে যোগাযোগ করলে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি আতিকুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য আমাদের দরকার হচ্ছে বস্ত্র কূটনীতি (অ্যাপারেল ডিপ্লোমেসি) এবং বিদেশে বাংলাদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলোকে কার্যকর করা। মিশনগুলোকে জবাবদিহির মধ্যেও নিয়ে আসতে হবে। নতুন রপ্তানি নীতিতে এ বিষয়ে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, এবারের নীতিতে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোর কার্যক্রমকে গতিশীল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মিশনপ্রধান এবং কমার্শিয়াল কাউন্সিলররাও জবাবদিহির মধ্যে থাকবেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন নীতিতে তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং বা হালকা প্রকৌশল পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, ভেষজসামগ্রী ও জাহাজনির্মাণ খাতে জোর দেওয়া হয়েছে।
সূত্রমতে, নতুন রপ্তানি নীতিতে সেবা খাত বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। এতে প্রথমবারের মতো সংযোজন করা হয়েছে ‘উন্নয়নমূলক সেবা খাত’ নামে একটি খাত। পর্যটনশিল্প, স্থাপত্য, প্রকৌশল ও পরামর্শক সেবা খাতকে বিশেষভাবে সহায়তা দেওয়া হবে। এ জন্য এগুলোকে বিশেষ উন্নয়নমূলক সেবা খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উদ্ভিদ ও উদ্ভিদজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে মান নিশ্চিতকরণের জন্য পথনকশা তৈরির অঙ্গীকার করা হয়েছে নতুন নীতিতে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) বা যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অ্যাক্রিডিটেড টেস্টিং ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা ও সক্ষমতা বাড়ানোর কথাও বলা রয়েছে এতে।
রপ্তানিমুখী শিল্পে অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ ইউটিলিটি সার্ভিস বা পরিষেবাসমূহ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন নীতিতে। সেই সঙ্গে এতে কমপ্লায়েন্স-সহায়ক যন্ত্রপাতি, ফায়ার ইকুইপমেন্ট শুল্কমুক্তভাবে আমদানির সুযোগ রাখার কথা বলা হয়েছে।
বন্দরমুখী যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নসহ সার্বিকভাবে রপ্তানি অবকাঠামো উন্নয়ন, পণ্য খালাস পদ্ধতি সহজীকরণ এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু, ব্যবসার ব্যয় কমিয়ে আনা, রপ্তানিকারকদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলা আছে নীতিমালায়।
এ ছাড়া নতুন নীতিতে দেশের রপ্তানি সম্প্রসারণে বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাস ও বাণিজ্যিক উইং বা শাখাগুলোর কার্যক্রম আরও গতিশীল করা, সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যমান রপ্তানি নীতির (২০১২-১৫) মেয়াদ গত ৩০ জুন শেষ হয়েছে।
বাণিজ্যসচিব প্রথম আলোকে জানান, তাঁর মন্ত্রণালয় শিগগিরই বই আকারে নতুন রপ্তানি নীতি জারি করবে। এর আগ পর্যন্ত অবশ্য বর্তমান নীতিই কার্যকর থাকবে।