Thank you for trying Sticky AMP!!

'পোশকশিল্পে শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন চলছে'

তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের সংগঠনগুলো বলছে, শ্রমিকদের অব্যাহত ছাঁটাই ও নির্যাতন চলছে। গার্মেন্ট মালিকেরা সরকারের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে। এখন মালিকপক্ষ বিরাট আর্থিক সুবিধার জন্য দরকষাকষি করছে। আর দরকষাকষির ক্ষেত্রে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের হুমকি মালিকদের হাতিয়ার।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে গার্মেন্ট শ্রমিকেরা এসব কথা বলেন। অব্যাহত শ্রমিক ছাটাই, মিথ্যা মামলা, হয়রানি এবং রেশন সুবিধা দেওয়ার দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।

সমাবেশ থেকে বলা হয়, মালিকেরা সরকারি সমর্থনে গাছের খেয়ে তলারটাও লুট করতে চাচ্ছে। যার ফলে শিল্পে ক্রমেই শ্রমিক বিক্ষোভ থেকে অনিবার্য বিস্ফোরণ সময়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থার জন্য মালিকপক্ষ এবং সরকারের মদদপুষ্ট আচরণ দায়ী।

সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিকনেতা ও গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টুঘোষ বলেন,
গার্মেন্ট মালিকেরা যে কথা বলে লক ডাউনের মধ্যে কারখানা খুলেছেন সেই অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। কোনো অবস্থাতেতেই শ্রমিক ঠকানো বরদাস্ত করা হবে না।

গত ৪ জুন তৈরি পোশাক শিল্প সংগঠন বিজিএমই-এর সভাপতি রুবানা হক জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও গার্মেন্ট শিল্পে শ্রমিক ছাঁটাই হবে। ঈদের ছুটির পর যে শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবতা। অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে রুবানা হক বলেন, শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছ থেকে বড় একটা সহায়তা পেয়েছিলেন মালিকেরা। সেটি জুন মাসে শেষ হবে। তবে ৫৫ শতাংশ সক্ষমতায় কারখানা চালিয়ে শতভাগ কর্মী রাখা উদ্যোক্তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

মালিকপক্ষের এমন বক্তব্যে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শ্রমিকনেতারা। প্রেসক্লাবে আজকের সম্মেলনে তাঁরা বলছেন, মালিকপক্ষের এমন বক্তব্য উদ্দেশ্যমূলক এবং শ্রমিক নির্যাতনের উস্কানি ছাড়া কিছুই নয়। শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষ বলেন, বিজিএমইএ সভাপতির ছাটাই করার ঘোষণা শ্রমিকেরা প্রত্যাখান করেছে। করোনাকালীন সময়ে শ্রমিকদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, হয়রানি বন্ধ করা এবং আগামী বাজেটে শ্রমিকদের রেশনিং ও বাসস্থানের জন্য অর্থ বরাদ্দ করারা দাবি জানান তিনি।

সমাবেশে শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার বলেন, মালিকেরা কাজ নেই অজুহাতে সরকারের কাছ থেকে শ্রমিকদের বেতন বাবদ আর্থিক সুবিধা নিয়েছে। পরবর্তীতে আবার শ্রমিকেরই বেতন-বোনাস কেটে নিয়েছে মালিকেরা। মালিকপক্ষ সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেই চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে দফায় দফায় কাজে যোড় দিতে শ্রমিককে বাধ্য করেছে।

জলি তালুকদার আরও বলেন, সরকার মালিকদের কথায় উঠবস করেস তারা মালিবদের আবদার মেনে নিয়ে বেতন কর্তনসহ একের পর এক শ্রমিকবিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে। মহামারীকালে শ্রমিকদের ওপর আর কোনো জুলুম হলে ধর্মঘটসহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয়নেতা দুলাল সাহা, এম এ শাহীন, মঞ্জুর মঈন প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পল্ট মোড় ঘুরে মুক্তি ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।