Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রণোদনার আওতায় ঋণ ফেরতের নিশ্চয়তা চান ব্যাংকাররা

করোনাভাইরাসের প্রভাবে আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার যে প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তার পুরোপুরি বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ে আছেন ব্যাংকাররা। বিতরণ করা ঋণের টাকা ফেরত পেতে তাই সরকারের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চান তাঁরা। এ জন্য তাঁদের দাবি সরকারের পক্ষ থেকে একটা ‘ঋণঝুঁকি নিশ্চয়তা কর্মসূচি’ গঠন করা। পাশাপাশি আগামী জুন পর্যন্ত চলতি ঋণের কিস্তি না দিলেও খেলাপি হিসেবে গণ্য না হওয়ার যে নিশ্চয়তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্যাংকাররা চান এই সুযোগটি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হোক।

ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) গত মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে এক ভিডিও সম্মেলনে এ দাবি জানায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির এতে অংশ নেন। বৈঠকের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার যে প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তার বাস্তবায়ন এখনো শুরু হয়নি। মোটা দাগে এ প্যাকেজের অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন—দুটিই করবে ব্যাংক খাত। ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ—সব খাতকে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হবে। সুদের প্রায় অর্ধেক সরকার বহন করলেও বাকি অর্ধেক যারা ঋণ নেবে, তাদেরই বহন করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএবি ও এবিবি শুরুতেই মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৯৮ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করাকে সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ বলে প্রশংসা করে।

এতে আরও বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নগদ জমার হার (সিআরআর) ৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং রেপোর হার ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত ব্যাংক খাতে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করবে বলেও সংগঠন দুটি স্বীকার করে। আবার এ–ও জানায়, ব্যাংক থেকে মানুষের নগদ টাকা তোলার চাপ বেড়েছে এবং ব্যাংকের আমানত প্রবাহও কমেছে।

বিএবি সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, কিস্তি দিতে না পারলেও আগামী জুন পর্যন্ত গ্রাহকেরা খেলাপি হবেন না। এই সুযোগটি ডিসেম্বর পর্যন্ত শিথিল হওয়া দরকার।

এবিবি সভাপতি আলী রেজা ইফতেখার অর্থমন্ত্রীর কাছে দাবি করেন, প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে যেন ‘ঋণঝুঁকি নিশ্চয়তা কর্মসূচি’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করা হোক।

বিএবি ও এবিবির ভাষ্য শোনার পর অর্থমন্ত্রী তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ব্যাংক খাত হচ্ছে অর্থনীতির জীবনীশক্তি। করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে হবে অর্থনীতিকে। এ জন্য ব্যাংক খাতকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। ব্যাংকারদের তিনি খেলাপি ঋণের হার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার পরামর্শ দেন। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ব্যাংকের পরিচালন ব্যয়, তহবিল ব্যয় ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন যে ব্যাংক খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যা যা দরকার, সরকারের পক্ষ থেকে সবই করা হবে। এদিকে বিএবি ও এবিবি অর্থমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছে যে তাঁর পরামর্শগুলো বাস্তবায়ন করবে তারা। প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের ব্যাপারে শিগগিরই আবার বৈঠক করবে বিএবি ও এবিবি। সংগঠন দুটি প্রত্যেক ব্যাংককে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরির পরামর্শ দেবে বলে অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির অর্থমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছেন, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও ব্যাংক খাতের স্বার্থে দরকারি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।