Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রত্যাশা, আর্থিক খাত স্থিতিশীল হবে

>বিদায়ী ২০১৯–এর শুরুটা ভালো ছিল, শেষটা তেমন ভালো হলো না। শুরুতে ছিল অনেক প্রতিশ্রুতি, শেষটা ছিল অনেক ক্ষেত্রেই আশাভঙ্গের। কারণ, চাপের মুখে আছে অর্থনীতি। অর্থনীতির সঙ্গে যাঁরা নানাভাবে সম্পর্কিত, তাঁরা কীভাবে দেখছেন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে। কেমন গেল বিদায়ী বছরটি। অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো কী কী। তাহলে নতুন বছরে যাচ্ছি কী নিয়ে, প্রত্যাশাগুলো কী। ঠিক এই প্রশ্নগুলোই রাখা হয়েছিল দেশের বিশিষ্ট কয়েকজন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে। তাঁরা অর্থনীতির মূল্যায়ন যেমন করেছেন, তেমনি বলেছেন কী তাঁরা চান, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে অর্থনীতি।
শামসুল আলম

কেমন গেল
মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) বিবেচনায় ২০১৯ সালটি বেশ ভালো গেছে। গত অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ হয়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি। এ ছাড়া সরবরাহ অর্থনীতি বেশ গতিশীল ছিল। সামগ্রিকভাবে কৃষির ফলন ভালো হয়েছে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়—এসব হয়নি। সেবা খাতও বেশ চাঙা ছিল। মানুষের ভোগ বেড়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার ছায়া থাকলেও এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়েনি।

সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতি ২০১৯ সালে আরও গতিশীলতা পেয়েছে। প্রবাসী আয় ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বছর শেষে এই খাতে ১ হাজার ৫৫০ কোটি ডলার আসবে। প্রবাসী আয়ে ২৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চ্যালেঞ্জ
প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো, কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় বাড়েনি। এর পেছনের কারণ হলো, রাজস্ব খাতে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার হয়নি। ভ্যাট আইন হলেও ব্যবসায়ীদের কাছে যন্ত্রপাতি সময়মতো দিতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ, মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এখন প্রায় ৬ শতাংশের মতো মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এটি একটি উদীয়মান চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। তৃতীয় চ্যালেঞ্জ, কাঙ্ক্ষিত হারে রপ্তানি বৃদ্ধি না পাওয়া। বিশ্ব প্রবৃদ্ধি কমেছে, তাই বাংলাদেশের রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব পড়েছে। ব্যবসা কখনো সরলরেখায় চলে না, সব সময়েই বাড়বে, তা নয়। কখনো বাড়বে, কখনো কমবে। ভারত ও চীনের অর্থনীতি পড়ে গেছে। চলতি বছরটি বিশ্বের কম প্রবৃদ্ধির বছর ছিল। 

তিন প্রত্যাশা
প্রথম প্রত্যাশা, আগামী বছরে আর্থিক খাত স্থিতিশীল থাকবে। অবশ্য সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে। ব্যাংক খাতের সংস্কার ও শক্তিশালী করতে ব্যাংক কমিশন গঠনের চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এ ছাড়া নতুন ভ্যাটও নতুন বছরে আরও বেশি দক্ষতার সঙ্গে কার্যকর হবে। এসব মিলিয়ে আর্থিক খাতটি স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করছি। 

দ্বিতীয় প্রত্যাশা, প্রবাসে বাংলাদেশি যাওয়ার সংখ্যা বাড়বে। যা প্রবাসী আয় বাড়াবে। কয়েক বছর ধরেই প্রবাসে বাংলাদেশি যাওয়ায় প্রবণতা বিবেচনা করলে আগামী বছর সাড়ে ১০ লাখ লোক কাজ নিয়ে বিদেশে যাবেন। মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তেলের দাম কমছে না, বরং কিছুটা বাড়ছে। যাতে ওই সব দেশের অর্থনীতি চাঙা হবে, বিদেশি শ্রমিক নেওয়ার সংখ্যা বাড়বে।

মানব উন্নয়নে অগ্রগতি হবে—এটাই তৃতীয় প্রত্যাশা। বাজেটে শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেমন, প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বছরে কমপক্ষে ৬০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

শামসুল আলম
সদস্য
পরিকল্পনা কমিশন